Wednesday, December 27, 2017

রোজনামচা - হিন্দী সিনেমা "টাইগার জিন্দা হ্যায়"

ক্যম্নে ক্যম্নে জানি হল-প্রিন্টের "টাইগার জিন্দা হ্যায়" দেখে ফেললাম! দেখার সময় শুধু প্রিজন ব্রেক এর সিজন ফাইভের কথা মনে পড়ছে! মনে হইছে "প্রিজন ব্রেক; সিজন ফাইভ দ্বারা পুরো সিনেমা প্রভাবিত"!

এমন কি কারো মনে হইছে!? খুব জানতে ইচ্ছে করছে।

ছোট্ট করে রিভিউ:
এমনিতে এইসব হাইপ মার্কা মুভি দেখিনা কিন্ত সালমান খান হাইপ অগ্রাহ্য করতে পারিনাই। সিনেমার "সোয়াগাত" গান আমার কাছে "পুরাই বুলশীট"! ওভারঅল "চলে" টাইপ আআমার কাছে। এছাড়া ভালো প্রিন্টে দেখলে ভালোই লাগবে বলে মনে হয়।

২৭.১২.২০১৭

Sunday, November 26, 2017

উবার যুগের "ছেনঝি" অভিজ্ঞতা

কাল ময়মনসিংহ থেকে ফিরেছি, বাস থেকে নেমেছি মহাখালী কাঁচাবাজার। বাসে বসেই ভেবেছি একটা উবারে চড়ে বসবো। কিন্তু কাঁচাবাজারের সামনে নেমেই দেখি অনেকগুলো সিএনজি, আমি ফোন বের করার আগেই একজন মধ্যবয়সী সিএনজি ড্রাইভার এগিয়ে এলো।

- স্যার! কোথায় যাবেন?
সিএনজি ড্রাইভার আবার স্যার বলে নাকি!?!
- যাত্রাবাড়ী! কত নিবেন?

সে এক হাতে আমার সবচেয়ে বড় ব্যাগটা তুলে নিয়ে বললো: ২৫০ টাকা!

আমি মনে মনে হতবাক! ৩০০ টাকা সেধেছি তাও সিএনজি পাইনাই এমন কত দিন গেছে! আমি উবারে আরামে যাব বলে সিএনজি তে যেতে চাইছি না। বললাম ২০০ পাবেন! (এই টাকায় যাবার প্রশ্নই আসেনা!)

- আর ২০ টাকা বাড়ায়ে দিয়েন স্যার! সে ব্যাগ নিয়ে হাটা শুরু করলো!

তার সিএনজি অন্যদের চাইতেও অনেক দূরে ছিল। সে নিজে আমার দুইটা ব্যাগ সিএনজিতে ওঠালো এবং যথেষ্ট ভালো ব্যবহার করল। (যেটা আসলে সিএনজি ড্রাইভারদের জন্য দূর্লভ!) আমি নিজের সিদ্ধান্ত বদলে সিএনজিতে উঠে পড়লাম।

তো এগুলোই উবার-পাঠাও এফেক্ট!

সবাই "ঠিক লাইনে" চলে আসবে। সময়টা এখন "সেবা/সার্ভিস" দেবার; স্ট্রাইক করেন আর আন্দোলন করেন সেবার যায়গাটাতে মান না বাড়ালে আপনার "ভ্যালু" নাই সেইটা কিছু সিএনজি ড্রাইভারও শিখে গেছে!

দেখে ভালো লাগলো।

Tuesday, November 14, 2017

সূত্র: রেসিডেন্সী

রেসিডেন্সীতে চান্স পাবার একটা সহজ সূত্র:

অন্যেরা যা পারেনা সেগুলো পারতে হবে, অন্য সবাই যা পারে সেগুলো "না পারা" যাবেনা!

Saturday, October 7, 2017

প্যালিনড্রোম ৭/১০/২০১৭

আজকের তারিখ টি একটু ব্যতিক্রম। এটি একটি প্যালিনড্রোম ( অর্থাৎ সামনে থেকে এবং পিছন থেকে সমান)
আজকের তারিখ ৭-১০-২০১৭ উল্টো দিক থেকেও তাই। যেমন ৭১০২-০১-৭!

অন্যান্য সব ভাষার মত বাংলাতেও সুন্দর প্যালিনন্ড্রোম আছে! 
এমন কয়েকটা সুন্দর প্যালিনড্রোম...................

কিছু শব্দঃ

  • ইহাই
  • কনক
  • কালিকা
  • খামোখা
  • জলজ
  • তখত
  • তফাত
  • দরদ
  • নন্দন
  • নবজীবন
  • নবীন
  • নয়ন
  • নরুন
  • নিড়ানি
  • বনমানব
  • বলিব
  • বাহবা
  • মরম
  • মলম
  • মহিম
  • সন্ত্রাস
  • সন্ন্যাস
  • সরস
  • সরেস
  • সহিস
  • হুবহু


কিছু বাক্য বা নামঃ 

  • ইলু দলুই
  • ওর মা আজ আমারও
  • কাক কাঁদে কাঁক কা
  • কাকা তো কাকা
  • কীর্তন মঞ্চ পরে পঞ্চম নর্তকী
  • কেবল ভুল বকে
  • ক্ষীর রস সর রক্ষী
  • খা সমস্ত রুটি রুস্তম সখা
  • চার সের চা
  • চেনা সে ছেলে বলেছে সে নাচে
  • ঠাকুরদাদার কুঠা
  • তাল বনে নেব লতা
  • তুমি কি মিতু
  • তোল হস্তে আরে খা রে আস্তে হল তো?
  • থাক রবি কবির কথা
  • দাস কোথা থাকো সদা? 
  • দেবী দে
  • না না কেনা না
  • না বললে লব না
  • নাম লেখালেম না
  • নিধুরাম রাধুনি
  • নিমাই খসে সেখ ইমানি
  • বই চাইব
  • বল খেলব
  • বিকল্প কবি
  • বিরহে রাধা নয়ন ধারা হেরবি
  • বেনে তেল সলতে নেবে
  • মামাতো মামা
  • মার কথা থাক রমা
  • মীমার মামী
  • রবীন দা দানবীর
  • রমা তো মামা তোমার
  • রমাকান্ত কামার (এইটাই সবচে জনপ্রিয়)
  • রায়মণি ময়রা
  • সদাই দাস
  • সদানন দাস
  • সীমার মাসী
  • সুবর্ণা বসু
  • সুবললাল বসু
  • হারান রাহা



বাংলাভাষায় কিছু বড় প্যালিনড্রোম হল: (জানামতে)
তোল হস্তে আরে খা রে আস্তে হল তো?
বিরহে রাধা নয়ন ধারা হেরবি
চেনা সে ছেলে বলেছে সে নাচে!
কীর্তন মঞ্চ পড়ে পঞ্চম নর্তকী !

দাদাঠাকুর শরৎচন্দ্র পণ্ডিতই প্রথম বাঙালি যিনি বাংলায় প্যালিনড্রোম নিয়ে গভীরভাবে চর্চা করেছেন। দাদাঠাকুর সম্পাদিত ‘বিদূষক’ পত্রিকায় তিনি অনেক বাংলা প্যালিনড্রোম বাঙালিকে উপহার দিয়েছেন।

কাক কাঁদে কাঁক কা
চেনা সে ছেলে বলেছে সে নাচে
তাল বনে নেব লতা
মার কথা থাক রমা
রমা তো মামা তোমার
চার সের চা
বেনে তেল সলতে নেবে
ক্ষীর রস সর রক্ষী
কেবল ভুল বকে
দাস কোথা থাকো সদা? 
নিমাই খসে সেখ ইমানি
থাক রবি কবির কথা
বিরহে রাধা নয়ন ধারা হেরবি – ইত্যাদি হল দাদাঠাকুর সৃষ্ট অমর প্যালিনড্রোম। 

তাঁর সৃষ্টি একটি প্যালিন্ড্রমিক পক্ততিমালাঃ 
"রাধা নাচে অচেনা ধারা
রাজন্যগণ তরঙ্গরত, নগণ্য জরা
কীলক-সঙ্গ নয়নঙ্গ সকল কী? 
কীর্তন মঞ্চ‘পরে পঞ্চম নর্তকী"

আশ্চর্যের ব্যাপার এই যে খ্রীষ্টধর্ম অনুযায়ী পৃথিবীর প্রথম শব্দ ছিল প্যালিনড্রোম!!!!!!
আদম প্রথম ইভকে প্রথম বলেছিল:
"MADAM 'I'M ADAM"! 

Friday, October 6, 2017

গ্যালকো আছে গ্যালকো! থাকলে দাও!

আমার মেয়ে টিভি খুব একটা দেখেনা কিন্তু সে কোন একসময় কোন বিজ্ঞাপন দেখেছে। সেইটাই আওড়াচ্ছে আজ:

গ্যালকো আছে, গ্যালকো! থাকলে দাও!

খুব গম্ভীর মুখে সে বলে বেড়াচ্ছে! এত বিজ্ঞাপন থাকতে, এত জিংগেল, এত পাঞ্চ লাইন থাকতে সে খুঁজে পেয়েছে এমন একটা লাইন যে বিজ্ঞাপন আমি নিজেও দেখেছি বলে মনে পড়েনা

... গ্যালকো আছে গ্যালকো! থাকলে দাও!!

০৪/১০/২০১৭

ছেলেরা কোথায়!?

আজ স্বশরীরে পরীক্ষা হলে গিয়ে দেখলাম ছেলে-মেয়ের যে অনুপাত তাতে তো অনেকগুনেই এগিয়ে থাকবে ছেলেরা।

অথচ বরাবরই পত্রিকার পাতা থেকে শুরু করে হিসাবের খাতায় মেয়েরা এগিয়ে। সব মেডিকেল।কলেজগুলোতে দএকএখা যাবে ছেলে-মেয়ে অনুপাতে ছেলে সংখ্যালঘু! এমনো মেডিকেল কলেজ আছে যেখানে ছেলেরা এককোনে জুবুথুবু হয়ে বসে থাকে একদল মেয়েদের ভিড়ে!

শুধু গ্রাজুয়েশনেই না, পোষ্ট-গ্রাজুয়েশনেও মেয়েদের জয়জয়কার। "মেয়েদের সাবজেক্ট" হিসেবে খ্যাত গাইনীতে কিন্তু অত ছেলেরা যায়না এখনো! অন্যদিকে এখন এমন কোন সাবজেক্ট নাই যেখানে মেয়েরা যাচ্ছেনা, বরং অনেকগুলোতে তারাই ডমিনেট করছে!

মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে, ভালো করছে সেটা সমস্যা না কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমাদের ছেলেদের হলোটা কি!?

নানাবিধ তাড়না, যাতনা ও দায়িত্বের যাতাকলে পড়ে এরা ঠিক কুলিয়ে উঠতে পারছে না কি!? আমার মনে হয় এই বিষয় নিয়ে সিরিয়াসলি ভাববার সময় এসেছে।

মেয়েরা যতই বলুক তাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছেই, আমাদের দেশে এখনো চিকিৎসক হিসেবে মেয়েদের সবজায়গাতে সুবিধাটা পরিপূর্ণ হয়নি। উপরুন্ত কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব সীমাবদ্ধতাও আছে, বিশেষ করে সংসার প্রতিপালন ও সন্তান লালনের দায়িত্বটুকু এখনো প্রায় পুরোটাই তাদের। তারা  রাত্রিকালীন ডিউটিতে অনেকক্ষেত্রেই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, দূর্গম এলাকায় চাকুরি সম্ভব হয়না, মাতৃত্বকালীন ছুটিও প্রায় অর্ধবছর।

এসব প্রতিবন্ধকতার বাইরেও আরো হাজারো সমস্যার কারণে এই বিপুল সংখ্যক নারী চিকিৎসকের জন্য শেষপর্যন্ত গ্রাজুয়েশন হয়ে যায় "অর্নামেন্টাল"; বিয়ের বাজারে একটি অনন্য যোগ্যতা মাত্র! অনেকেই পোস্ট-গ্রাজুয়েশন শেষ করেও ঠিক যে মাপের বিস্তৃত সেবা কমিউনিটিতে দেয়ার কথা সেটা দিতে পারছেন না।

এই এতসব সীমাবদ্ধতা ও বাস্তবতার কথা কোন মেয়েকে নারীকে ছোট করবার জন্য নয় বরং তাদেরকে আরো বাস্তবসম্মত চিন্তা করবার জন্য, যারা পলিসিমেকার আছেন তাদের আরো ভাববার জন্য। সর্বপরি আমাদের ছেলে বা পুরুষদের আরো একটু সচেতন হবার জন্য, শেষে নিজের জায়গাটাতেও যেন একটা "অগ্রহণযোগ্য" আসাম্য চলে না আসে!

Thursday, September 21, 2017

তিনস্তরবিশিষ্ট জ্ঞান!

এটি একটি "আবেগবর্জিত", "যুক্তিপূর্ণ" মতামত।

এখানকার একটি বিষয়ে আসলেই আমি জোর দিতে চাই, আমাদের "আত্মসম্মানবোধ" খুব কম হলেও "আত্মঅহমিকা" খুবই বেশী!

জ্ঞানের তিনটি স্তর আছে,
প্রথম স্তরে ব্যক্তি কিছু জানেনা এবং তার অহংকারও থাকেনা।
দ্বিতীয় স্তরে সে কিছু জানে এবং তার সেই জানা নিয়ে অহংকারের শেষ থাকেনা।
কিন্তু তৃতীয় স্তরে এসে যখন আরো জানতে থাকে, তখন সে অবিষ্কার করে সে আসলে কিছুই জানেনা! তার জ্ঞান আসলে সীমিত! তখন সে বিনয়ী হয় ও সত্যিকারের জ্ঞানী হয়।

আমরা সবাই বোধকরি ২য় স্তরে আটকে থাকি, খুব কম সংখ্যক ডাক্তার/মানুষই ৩য় স্তরে যায়।

সুতরাং আমরা আফসোস করতেই পারি! 😰

Wednesday, September 13, 2017

বিকাশ ফ্রড

ঘটনা আজ বিকেলের। ফোনে এই (01825941832) নাম্বার থেকে একটা ফোন আসলো। 

- "স্যার আমি বিকাশ কাষ্টমার সার্ভিস থেকে বলছি, আপনার বিকাশ এ্যাকাউন্টে ১ মাস আগে একটি এসএমএস দিয়ে "সেভেন ম্যানু সার্ভিস" আপডেট করতে বলা হয়েছিল। আপনি না করায় আপনার এ্যাকাউন্ট সাময়িক স্থগিত আছে।"
- না। আমার কাছে এমন কোন এমএসএস আসেনাই। আসলে তো আমি দেখতামই। (আমি ফোন ব্যবহারে যথেষ্ট সচেতন!)
- না স্যার এসেছে, আপনি খেয়াল করেননি, এখন আপনার এ্যাকাউন্ট সাময়িক বন্ধ।
- তা কেন হবে? কবে এসএমএস এসেছে আপনি বলেন? হঠাত করেই এ্যাকাউন্ট বন্ধ করবেন কেন?
- না স্যার আমাদের কিছুই করবার নেই। আমরা দেখতে পাচ্ছি আপনি কাল রাত ১০.০২ টার সময় ---- টাকা ক্যাশ ইন করেছেন। (এই তথ্য দিয়ে সে বোঝাতে চাইছে সে ডাটাবেজ এ আছে, আসলে এই তথ্য সে যে এজেন্টের কাছ থেকেই পেতে পারে, এইটা ঠিক সে সময়ে মাথায় আসেনাই) আমাদের আরো কিছু তথ্য দিয়ে সাহায্য করুণ। (উল্টো সিকিউরিটি ইস্যু দেখিয়ে ইনফরমেশন নেয়া!) 

- স্যার এ্যাকাউন্ট নাম কি দেয়া আছে?
- বললাম। 
- আপনার শেষ ক্যাশ ইন, ক্যাশ আউট বলুন।
- আমি বললাম। (এই তথ্য কিন্তু বিকাশ হেল্প লাইনে ফোন করলে দেয়া লাগে, আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে)
- স্যার এখন আপনার ব্যালান্স কত, পয়সা সহ বলুন? (কত বড় দাও মারবে, কত এ্যফোর্ট দিবে তাঁর একটা সহজ সমীকরণ!) 
- সেইটা তো এইভাবে এখন বলা সম্ভব না, এত এর কাছাকাছি হবে কিছু।

- "স্যার আপনার তথ্যগুলো আমরা মিলিয়ে দেখছি সেগুলো ঠিকই আছে, কিন্তু আপনার এ্যাকাউন্টে এখন থেকে আর কোন লেনদেন করতে পারবেন না। আপনি ভোটার আই ডি'র কপি, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কপি আর একটা পাসপোর্ট ছবি নিয়ে নিকটস্থ বিকাশ অফিসে যোগাযোগ করুন"। (প্রথমে আস্থা অর্জন! "আপনি অফিস থেকেই সার্ভিস নিন" - এমন ভাব)

- কিন্তু কয়েকদিন আগেই তো আমি এগুলো দিয়েই আমার বিকাশ একাউণ্ট এ্যাকটিভ করে নিলাম। (আসলেই  বেশ কয়েক মাস আগে আমার বিকাশ একাউন্ট খুব সামান্য [এনআইডি'র একটা অক্ষর ফটোকপিতে আসেনাই!] কারণে সাসপেন্ড হয়ে গেছিল, তখন বিকাশ অফিসে গিয়ে খুব হাঙ্গামা করে আবার চালু করা গেছে )

- (একটু বিরক্ত) এখন এগুলো আবার দিতে হবে। অবশ্য আপনি চাইলে আমি আপনাকে কিছু ইন্সট্রাকশন দেই, সেভাবে কাজ করলে আপনি নিজেই "সেভেন মেন্যু সার্ভিস"টি এ্যাক্টিভ করে নিতে পারবেন। (স্বাভাবিকভাবেই যদি ফোনেই সমাধান হয় তবে কে স্বশরীরে যেতে চায়!?) 
- আচ্ছা বলেন।

এরপর আমাকে আরেকটা ফোন নিতে বলা হল, সেইটার নাম্বার বলতে বললো, এইবার সেই নাম্বারে কল আসলো  (উদ্যেশ্য, যেন আমি আমার হাতের ফোন থেকে সহজেই বিকাশ এ্যাকাউন্টে ঢুকতে পারি!)

- স্যার! আপনি কি আমাকে শুনতে পাচ্ছেন? তাহলে আগের ফোনটি কেটে দিন।

এরপর তারা আমাকে কিছুক্ষণ বিকাশ মেন্যুতে ঢুকতে বললো।
- স্যার কি দেখতে পাচ্ছেন? একটু পড়ুন। স্যার আপনি কি এক এর পর ডট দেখতে পাচ্ছেন না? আপনি কি ৭ নাম্বারটা দেখতে পাচ্ছেন? এইবার বের হয়ে আসুন, আবার *২৪৭# দিন। (খুব ডিটেইল বলার চেষ্টা! যেন কেউ ধরেই নেয়, সিস্টেমে কিছু হচ্ছে!!)

এইভাবে কিছুক্ষণ করার পর সে আমাকে বললো আমার পিন চেঞ্জ করতে এবং সেইটা হচ্ছে ১৬২৪৭!
আমি তখন তাঁকে চ্যালেঞ্জ করলাম, আপনি অথেনটিক সেইটা প্রমান কি?

এইবার সে ভাব নেয়া শুরু করলো, এই কথা তো আমাকে আগেই বলতে পারতেন, আপনার সবকিছু তো আমি বলছি, আমি কিভাবে জানলাম, এত সময় নষ্ট করলেন, আপনি বেটার বিকাশ কাষ্টমার কেয়ার থেকে এগুলো ঠিক করে নেবেন। (ভাব এমন সে অনেক করেছে, এইবার রেখে দেবে!)

আমি তাঁকে বললাম, না! আপনি সত্যি বলছেন কিনা সেইটা আমার জানার অধিকার আছে!

এইবার একটা ফোন আসলো +১৬২৪৭ থেকে! (যেইটা আসলে বিকাশের হেল্প লাইন নাম্বার! শুধু সামনে + নাই!)

- স্যার! আপনি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন, আমি বিকাশ হেল্প লাইন থেকে ফোন দিচ্ছি। শুনতে পেলে কেটে দিন!

- আচ্ছা আপনি দিয়েছেন নতুন পিন?
- হুম! (আমি কোনভাবেই অন্যকে জানিয়ে পিন চেঞ্জ করবোনা, আসলে এই সময়ই আমি ধরে পারি ব্যপারটা)
- এখন কি হচ্ছে?
- কিছুই হচ্ছেনা!
- না স্যার! এত সময় তো লাগেনা। আবার দেন, শূন্য দুইবার দেন, সেন্ড না চেপে কেটে দেন! (এইরকম কিছু হবার কথাই না!)

আমি কিছুই না করে শুধু শুনে যাচ্ছি।

- আচ্ছা এরপর?
- স্যার! পিন চেঞ্জ করে আমাদের হেল্প লাইন নাম্বার দেন।
- আচ্ছা। তারপর।
- এইবার ৩ নাম্বার অপশন এ যান (সেন্ড মানি অপশন!), একটা নাম্বার টাইপ করুন (একটা জিপি নাম্বার ০১৭৫৫৫... মনে নেই)

- আচ্ছা হইছে। বুঝছি। আমার আর টাইম নাই, ম্যালা কথা কইছি। 

এরপর আমি বিকাশ হেল্প লাইনে ফোন দিলে ওরা কনফার্ম করলো এইটা ফ্রড (তাঁদের খুব একটা উদ্বিগ্ন মনে হলো না। বরং "এইটা ফ্রড" বলার সময় সঠিক ডায়াগনোসিস করার একটা তৃপ্তি কণ্ঠে বোঝা গেল।) তারা খুব একটা উথসাহিত না হলেও নিতান্তই জোর করে যে নাম্বারটা থেকে ফোন এসেছিলো (0183988395) দিলাম। যদিও ভদ্রতা করে রাখলো তবে আর কিছু করবে বলে মনে হলোনা।

আমি নিজেকে যথেষ্ট সচেতন মনে করি, আমারই বুঝতে কিছুটা সময় লেগেছে। আর আসলেই কাল আমি কিছু বিকাশ লেনদেন করতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছিল, মেন্যু আসছিলো না। ব্যালান্স দেখাচ্ছিল না। আর প্রায়ই অনেক কাজ ফোনেই করতে বলে ব্যাপারটা "হতেই পারে" ধরে নিয়েছিলাম। 

এখন ফ্রডেরাও কিন্তু বেশ প্রোফেশনাল! তাই সবাইকে খুব সচেতন থাকার অনুরোধ করছি। কাউকে কোনমতেই  বিকাশ এ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে, কবে তুলেছেন, কত ক্যাশ ইন করলেন বলবেন না, হোক কুড়ি টাকা! পিন তো প্রশ্নই আসেনা! 

আর চাইলে এই নাম্বারগুলো ব্ল্যাকলিস্ট করে রাখতে পারেন, যদিও এরা অনেকগুলো নাম্বার ব্যবহার করে। যেগুলো আবার দেখতে বেশ "ভালো"! 

এবং অবশ্যই রিলায়েবল এজেন্টের কাছ থেকে ক্যাশ ইন করা ভালো (যদিও সেইটা সবসময় সম্ভব না), কারণ আমার এই ব্যাপারটা ঘটছে ঐ এজেন্টের মাধ্যমেই।

সচেতন থাকি, সাবধানে থাকি।
#বিকাশ #bikash

Friday, September 8, 2017

কি হয়, কেন হয় - সিরিজ

আমরা যা জানি তার মাঝে একটা ধোঁয়াশা আছে।

যেমন আমরা ভাবি সিগারেট খেলে সিগারেটের নিকোটিন এর জন্য ফুসফুসে ক্যান্সার হয়, আসলে কিন্তু তা না। নিকোটিন মোটেও কারসিনোজেনিক (যারা ক্যান্সার করার জন্য দায়ী) না!

ক্যান্সার হয় ধোয়া যেটা "পান" করা হয় সেইটার উত্তাপের কারণে ফুসফুসের স্কোয়ামাস এপিথেলিয়াম মেটাপ্লাসিয়া হয় বলে।

আর ধুমপান আসক্তি কাটানোর জন্য "নিকোটিন চুইংগাম" এর কথা তো সবাই জানিই। সেটা তো ধনী দেশগুলোতে প্রচলিত আছেই, নিকোটিন তাই আসলে ক্যান্সার করেনা!

Wednesday, September 6, 2017

চিন্তা করি!

মেয়েকে তাঁর নানী জিজ্ঞেস করেছেঃ কী করছ নানুভাই?
মেয়ের উত্তরঃ চিন্তা করি! 

(তখন সে রুমের মাঝে কোমরে হাত একটা দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল!) 
০৪/০৯/২০১৭ 

Monday, August 28, 2017

মেয়ের কাছ থেকে শিখি

আমার মেয়ে কিছু নিতে বা করতে খুব জেদ করলে আমি বলি, "বাবা তোমাকে শিখাই"
এরপর তাকে সেটা ধরতে দিই, সে আর জেদ করেনা। তো এইবার মেয়েই আমাকে শিখালো!
আমি উ'টুবে (মেয়েকে এইটা দেখিয়ে খাওয়াতে হচ্ছে 😖 বলে চিনে ফেলেছে) শুধু Arrow Key আর F এর ইউস জানতাম। মেয়ে কয়েকদিন আগে আমাকে "J, K, L" কী এর ইউস শিখাইছে, তার চেয়ে বড় কথা 1 to 0  numerical key এর যে চমৎকার একটা ইউস আছে সেইটা আমি জানতামই না মেয়ে না শিখাইলে! (Key গুলা ট্রাই করেই দেখে নিন, যদি না জানেন!)
সে মাউসের লাল আলোর জন্য সবসময় মাউস চায়, আজ কাজ করতে পারছিলাম না তাই ইউএসবি খুলে দিয়েছিলাম। সে আমার কাছে সাহায্যও চায়নাই, নিজে নিজে মাউসের ইউএসবি কানেক্ট করে নিয়েছে! 😎

Thursday, August 24, 2017

সমস্যা নাকি ব্যবসা

আজ সারাদিনে বিভিন্ন কারণে আমাকে মোট ৫ বার ভিন্ন ভিন্ন রুটের বাসে উঠতে হয়েছে এবং আমি হঠাৎ করেই একটা ব্যাপার খেয়াল করলাম সেইটা হচ্ছে ছোট্ট চিরকূট দিয়ে সাহায্য প্রার্থনার হিড়িক।
এমনিতেই অনেকদিন ধরেই মাঝে মাঝে বাসে এগুলো দেখা যায়, ছোট চিরকুট সাথে কখনো একটা চকলেট। তেমন কিছু মুখে বলা হয়না, বসে থাকা সবার কোলে একটা করে দিয়ে যায় আবার পেছনে থেকে তুলে নিয়ে নেমে যায়। এগুলো ঈদ উপলক্ষে বাড়ে সেইটাও ঠিক কিন্তু আজ ৫ বাসের ৪ টাতেই এই চিরকুট পেয়েছি, বাকি একটায় লম্বা ফাইলসহ সাহায্য চাওয়া!
চিরকুট যারা দিচ্ছিল তাদের একজনের বয়স পাচ কি ছয়, গুলশান থেকে বাসে উঠলো, কথা বলতে চাইলে আমাকে পাত্তাও দিলোনা। আরেকজন ছিল ১৪-১৫ বছরের এক ছেলে, দেখলেই বোঝা যায় মারদাঙ্গা করে বেড়ায়। গালে কপালে কাটা দাগ, স্ট্যাইল করে চুল কাটা, ড্যাম কেয়ার ভাব! বাকি দুইজনের একজন একটা মেয়ে ১২-১৩ বছরের আরেকজন অল্পবয়েসী মা তার কোলে দেড় বছরের শিশু!
হঠাৎ করেই এই সাহায্য প্রার্থনার হিড়িক কি অন্য কোনোকিছু নির্দেশ করে!?
একে তো এদের অনেককেই দেখে খুব "সাহায্যপ্রার্থী" বলে মনে হয়নাই, আর একইসাথে বিভিন্ন রুটে এদের উপস্থিতি প্রমাণ করে এরা পরিকল্পিত। কেউ আড়ালে থেকে এদের দিয়ে "সাহায্য-ব্যাবসা"টা করাচ্ছে। টাকা ভাগাভাগি হয়ে যাচ্ছে!
এর মানে এই নয় যে এদের কেএ টাকা-পয়সা দিবেন না, সাহায্য করবেন না! আসলে খুব বেশী লোকে করে তাও না, কিছু বয়ষ্ক আর মেয়ে-মহিলারাই করে, যাদের হঠাৎ এদের দেখে মায়া জন্মে, যারা এসব দেখে অভ্যস্ত নয়।
কতরকম ব্যাপারস্যাপারই না চলে আমাদের চারপাশে, এই ঢাকায়।
২৪.০৮.২০১৭

সাম্মী কি করেছে এটা!?

আমার মেয়ে তার এই ছোট্ট পুতুলের ধ্বংসাবশেষ দেখিয়ে বলছে:
"আমি কি করেছি এতা!?"
"সিলাই কয়ে দাও!"
(এগুলোর হাত পা জামা কাপড় সব সেইই আলাদা করে ফেলেছে! তাও অনেকদিন আগেই!)
২৪.০৮.২০১৭

রোজনামচা - ২৩.০৮.২০১৭

আসলে তারিখটা ২৪ হওয়া দরকার ছিল। বাসায় ফিরতে দিন পার হয়ে গেল!

টিটু স্যারের কাছে মায়ের রিপোর্টগুলো দেখাইতে গেছিলাম, প্রায় ০১.৩০ ঘন্টা অপেক্ষা করে দেখাতে পারলাম। যেতে বেশী বেগ পেতে হয়নাই কিন্তু জ্যাম ছিল। আসার সময় ভেবেছি বাস পেলে রাস্তা তো ফাকা। কিন্তু পথে নেমে দেখি পল্টন মোড়ে বিশাল জ্যাম। সব ট্রাক আর কিছু লরি বের হয়ে গেছে রাস্তায়, এই রাতেও ট্রাফিক একজন দাঁড়িয়ে। বাস থেকে নেমে গেছি প্রেসক্লাব মোড়েই। হেটে সামনে এসে দেখি অবস্থা এই। কোন চ্যানেল থেকেই বাস আসছে না, সব ঘুরে যাচ্ছে নয়ত জ্যামে আটকে আছে!

তাই অগত্যা একটা রিক্সা নিলাম, রিক্সা যখন দৈনিক বাংলা থেকে ডানে বংগভবনের দিকে মোড় নিলো তখন রাস্তার দুপাশে অনেকেই রাতের ঘুমের আয়োজন করছে, কিছু ছেলেপেলে কোন নেশার আয়োজনে আছে, একটা কোনে দেখলাম পলিথিন খাটিয়ে উঠতি বয়সী এক মেয়ে কোন এক আয়োজন করছে যেখানে মশার কয়েলের এন্তেজাম আছে! মেয়েটা তার অর্থনৈতিক অবস্থার তুলনায় স্থূলকায়, হয়ত ওসিপির এফেক্ট!

হায় জীবন!

এ ডৃশ শেষ না হতেই সামনে আগোতেই দেখি এক মা তার দুধের শিশুকে নিয়ে একেবারে রাস্তায় বসে গেছে, তার সাথে কয়েকজন ফুটপাথ থেকে পা ঝুলিয়েছে রাস্তায়, যেন বাড়ির উঠানে তারা ভরা আকাশের নীচে গল্পের আসর বসেছে! বাচ্চাটা খেতে খেতে ঘুমিয়েই গেছে, শিথিল ধুলোমাখা পা দুটো মায়ের কোল থেকে ঝুলে আছে, মা একহাতেই আলস্যে ধরে আছে শিশুকে। বাবা কে বোঝা গেলনা যারা ছিলো সবাই আরো অল্পবয়েসী। হয়ত মা ফুটপাতেই জীবিকার সন্ধান মেলে!
ইস! কী কঠিন দৃশ্য!

নিজের বাচ্চা আছে বলে এগুলো খুব বেশী লাগে! একেবারে বুকের ভেতর মুচড়ে ওঠে! এদের জন্য কিছু করা দরকার। বড় হয়ে গেলে, বুঝতে শিখলে একটা কিছু হোক, কিন্তু এই শিশুদের কেন এমন হবে!?

আমার মেয়েটার মত ওদেরকেও বড় ভালোবাসতে ইচ্ছা করে, একটু মমতার ছোঁয়া দিতে ইচ্ছে করে। এটুকু ওদের পাওনা!

২৩.০৮.২০১৭

Tuesday, August 22, 2017

নীল আকাশের নীচে...

নায়ক রাজ রাজ্জাক এই নীল আকাশের নীচে আর নেই। কোন এক অনন্ত আসীমের দিকে চলে গেছেন। সেখানকাকার আকাশ হয়ত আরো নীল!

প্রথম খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয় স্কয়ার হাসপাতালে যখন তিনি ভর্তি হন সার্জারী ইউনিটে সানাওয়ার স্যারের অধীনে। বেশ কয়েক বছর ধরেই প্রায়ই অসুস্থ থাকতেন, বেশ কয়েকবার আইসিইউ ঘুরেছেন। প্রচুর সিগারেট খেতেন, ফুসফুস তা মেনে নেয়নি। অল্পতেই নিউমোনিয়া হয়ে যেত তবুও সিগারেট খাওয়া কমান নি।

তো সেদিন রাউন্ডে স্যার আসলে প্রথমেই আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেন: "কি ব্যাপার। নায়কের কি অবস্থা? চলতো দেখে আসি"
আমি প্রথমে ধরতেই পারিনাই স্যার কি বলছেন। যারা সানাওয়ার স্যারকে চেনেন তারা জানেন তিনি কি রকম রাশভারি মানুষ, তাঁর সব আবেগই নিয়ন্ত্রিত! তিনি যখন উচ্ছাস প্রকাশ করেন সেইটা আলাদাভাবেই ধরা যায়। স্যার প্রথমেই নায়কের রুমে গেলেন।
- কি নায়করাজ! কি খবর?
অনেক্ষণ কথা শুনলেন, প্রায় সবই "আধ্যাত্মিক টাইপ" কথা, নায়ক রাজও তাঁর কথার ঝাঁপি খুলে বসলেন। তাঁর শ্বাসের সমস্যা নাকি অনেক আগে থেকেই। সে সময়েই নাকি শুটিঙয়ের ফাঁকে  তোয়ালে দিয়ে মাথা ঢেকে "বেনজিন ইনহেলেশন" নিতে হত!

"সাল্বুটামলে কাজ করেনা আমার ঐ বেনজীনই ভালো ছিল।"
বোঝা যাচ্ছিল অনেক ঘুরে তাঁর সব ওষুধ যেমন মুখস্ত তেমন ওষুধে আস্থাও কম! ঐ অবস্থায়ও তাঁকে কেবিনে সিগারেট খাওয়া থামানো যায়নি। নাকয়েরা এমনই হয়। তারাই স্টাইল তৈরী করে, তাঁদের  জন্য সব আলাদা!

নায়কেরা সার্বজনীন। রাজ্জার নায়ক রাজ। নায়কদের রাজা। সানাওয়ার স্যার যতই আমাদের নায়ক হোক, স্যারেরও নায়ক তিনি!  স্যার তাঁকে কেবিন থেকে বেরিয়ে বললেনঃ
- নায়ক রাজ তাইনা? চলো অন্য রোগী দেখি!

আসলেই তিনি নায়কদের রাজা, নায়কদের নায়ক!

Thursday, August 10, 2017

সাম্মীকে রোদে দেই

দুপুরবেলা..
জানালা দিয়ে রোদ এসে পড়েছে বিছানায়। সেই রোদে বিছানার একটা বালিশ দেয়া আছে, ঘামে ভেজা বালিশগুলো তাতে একটু তরতাজা হয়।

আমার মেয়ে তার উপর গিয়ে বসে পড়েছে, বেশ কড়া রোদ তার গায়েও লাগছে। এ দেখে তারা মা যখন তাকে বললো:
- মা! কি করো!? রোদে কেন বসেছ? এদিকে আসো মা!
সে উদাস নয়নে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে, দু হাত কোলে ভাজ করা। উত্তর নাই।
আবার মায়ের প্রশ্ন:
-সাম্মী! কি করো!?
এবার সাম্মীর উত্তর:
-সাম্মীকে রোদে দিই!

(কিছু বলার আছে!? নাই। 😰)

০৬.০৮.২০১৭

রোজনামচা ০১.০৮.২০১৭

কত কি যে লিখতে ইচ্ছে করে!

এই যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আজ ঘোষণা দিয়ে দিলেন সিদ্দিকুরকে "স্বাস্থ্য অধিদপ্তর" চাকুরি দেবে, তার চোখ ভালো না হলেও"; এমনিতেই পুলিশের করা ঘা'য়ে মলম লাগানোর দায়িত্ব নিজের কাধে তুলে নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, না মন্ত্রণালয় নয় কিন্তু! সিদ্দিকুরকে বাইরে নেবার ৬ লাখ টাকা যেমন যোগাড় করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তেমনি তাকে চাকরিও দেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর! ওদিকে পুলিশ মুখে কুলুপ এটে বসে আছে! মাঝে বলেছিল "ইটের টুকরা"! এখন এখন যেহেতু নাসিম সাহেব সব বলে দিচ্ছেন তাই তারা চুপ চাপই আছে, এমনকি ঠিক কোন পুলিশ সদস্য টিয়ার শেল ছূড়েছিল তাও কিন্তু পুলিশ কখনও বলেনি। অথচ সব টিভি চ্যানেলের ফুটেজে আছে কে কিভাবে শেল ছুড়লো!!!

আবার এদিকে শিশু তোহফা তহুরাকে দেশে প্রথমবারের হাইপোপেগাস অপারেশন হয়ে গেল সবার অজান্তেই। অথচ দেশের চিকিৎসা ইতিহাসে এটি নি:সন্দেহে একটা মাইলফলক! সরকারি সুযোগ-সুবিধাতেই কিন্তু হয়েছে এই অপারেশন! দেশের সব বড় অর্জনই কিন্তু এসেছে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায়, কিন্তু "ব্যবসার" অংশটার কারণে বেসরকারি খাত এখনও মানুষের "আস্থা"র জায়গাটায় আছে। কারণ বিজ্ঞাপন আর চাকচিক্যময় পরিবেশ মানুষকে সরকারি সেবার প্রতি আস্থাহীন করেছে, নিজেদের পকেটের টাকায় "বড়" করছে তাদের!

আবার ইউএনও সালমন সাহেবকে "সিনিয়র সহকারী সচিব" এর মর্যাদা দিয়ে সচিবালয়ে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রশাসন কিন্তু তাদের পরিবারের সদস্যকে সর্বোচ্চ সমর্থন দিয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের সদস্যকেও কিন্তু মাথা নত করতে হয়েছে প্রশাসন সেটা বাধ্য করেছে।

এই হলো আমাদের অবস্থা! আমরা অন্যান্য ক্যাডার থেকে বহুগুণ পেছনে পড়ে আছি। আমাদের অনেক শিখতে হবে, নতুনদের যেমন তেমন আমাদের সিনিয়রদেরও, যারা আমাদের নীতিনির্ধারক, পথপ্রদর্শক। আসলে আমার নিজের কাছে মনে হয় তাদেরকেই বেশী "আপগ্রেড" হতে হবে, জনপ্রসাশন কিন্তু নিজেদেরকে বয়সের সাথে সাথে উন্নত করে আর আমরা যেন "ম্যানেজার" হিসেবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে আরো "সংকীর্ণমণা", কোন কোন ক্ষেত্রে "অথর্ব" হয়ে যাই!

Saturday, July 22, 2017

মেয়ের খাওয়া

আজ সকালে বাইরে যাই যাই করেও গেলাম না। শনিবারের ছুটিটা পড়ার কাজে লাগানো গেলনা। বিকালে আবার শিলাপুর প্রোগ্রামে যেতে হবে।

মেয়েটা ৯ টার পরেই উঠে গেছে। উঠেই সে আর কারো কাছে যাবেনা! বাবা আছে তার সাথে আর কার কাছে যাবে!? অনেক বলে কয়ে হাতমুখ ধুয়ে নিয়েছি!

তাকে নিয়েই খেতে বসলাম টেবিলে। ভাবচি আমি যা খাই ওকেই একটু করে দিব। সে তখন টেবিলে রাখা রুটি, ডিম দেখে "ওটা কি"? শুরু করেছে। এরপর বললো "খাবে"।
ভাবলাম এমনিতেই যেমন বলে তেমন করেই এই "খাবে" বলা। তাকে একটু ছিড়ে দিলাম রুটি, ডিম সিদ্ধ একটু ভেঙে দিলাম। সে খেলো, এরপর নিজেই ছোট হাতে রুটি টেনে একটু একটু করে টুকরো মুখে দিচ্ছে!
নানী তাকে আরো একটু ডিম দিল, সে খাচ্ছে। ডিমের টুকরো বড় হয়ে গেলে ফেলে দিলে ভাবলাম খাবেনা। কিন্তু সে আবারো চেয়েই নিল। এইবার নানী তাকে একটা রুটি আর কিছুটা ডিম আলাদা প্লেটে দিল। সে চমৎকার করে ছিড়ে ছিড়ে একটু করে রুটি খেতে তাকলো। আবার আমাকে বলে "মজা!"

কী যে ভালো লাগলো! মেয়েটা একটু একটু করে নিজেই খাচ্ছে। দেখেই ভালো লাগে, আবার পড়ে গেলে যদি বলি "ওটা খেতে হয়না মা, দাও ফেলে দেই"! সে নিজেই বলে "আমি ফেলে দেই"! বলে নিজেই উঠে গিয়ে বোন প্লেটে ফেলে দেয়!

বেশ শান্ত হয়ে খেয়েছে আজ! আহা এমন করে যদি একটু খেতো!

২২/০৭/২০১৭

Monday, July 10, 2017

সময় তো সেই চব্বিশটি ঘন্টাই!

এ যুগে কবি রবীন্দ্রণাথ থাকিলে তাহাকে প্রতি প্রহরে কতটি ফোনকল ধরিতে হইত ইশ্বর জানেন। শরৎবাবু  ফেসবুকে কতশত পার্বতীর শিকার হইতেন কে বা বলিতে পারে!

এখনকার সময়ে আসিয়ে মানব সম্প্রদায় "কমিউনিকেশন স্কীল" এ এতখানিই বুৎপত্তি লভিয়াছে যে তাহার আহার নিদ্রা বলন চলন সবকিছুতেই একপ্রকার "যোগাযোগ-যোগাযোগ" ভাব প্রকট! তাহারা সর্বদা "যোগাযোগ" রক্ষা করিয়া চলিয়াছে! তাহার সবটিই নাকি প্রয়োজনীয়, কতকক আবার "জীবনধারণের জন্য আবশ্যক"এরও কাছাকাছি!

ওহে মানব! তোমরা যে এত "যোগাযোগদর্শিতা" (যোগাযোগে বিষেশ পারদর্শিতা - ইহা একটি নব্যসৃষ্ট শব্দ যাহা তোমাদের প্রচলিত 'জটিল', 'মাম্মা', 'প্যারা' হইতে উন্নত বলিয়া বোধ করি!) অর্জন করিতেছ দিনের চব্বিশটি ঘণ্টার সময় কি কিছুটা বাড়িয়াছে নাকি? উহা তো সেই সেকেলে, তোমাদের বাক্যে "খ্যাত" এর মত আদিকালের ২৪ এই আটক রহিয়াছে!

তো ২৪ ঘন্টার কতটি সময় "যোগাযোগে" দিবে কিছু "গণিত" করা দরকার নহে কি?

সময় যে বড় মূল্যবান!
বড় মহার্ঘ্য বস্তু!
বড় আরাধ্য সম্পদ!

উহার কিছুটা বিভূতিভূষণ নাম্মী হিদু লোকটার মত করিয়া "চোখ মেলিয়া দেখিতে" তাকাও...

ইহাতেও কিছু স্রষ্টার সাথে যোগাযোগ ঘটে কিন্তু!

Monday, July 3, 2017

তুমি মদ খেয়ে এসেছো

আমরা সেই ছোটবেলা থেকে সিনেমাতে দেখে এসেছি নায়ক তার "জীবদ্দশার কোন এক পর্যায়ে" রাত করে বাড়ি ফেরে এবং ফেরার সময় মদ খেয়ে ফেরে! কারণ তার স্ত্রীর প্রতি ভীষণ অভিমান হয়েছে, নিজেকে শেষ করে দেবার জন্য সে মদ খেয়েছে। এমন না যে সে প্রতিদিনই মদ খায়। নায়ক খুব ভদ্র ছেলে এগুলোর ধারে কাছেও নাই, আর এগুলো বেশি দেখাতো শাবানা-আলমগীর যুগের সিনেমায়। তখনকার নায়কেরা তো আরো কনজার্ভেটিভ ছিলো; তারা তো কোন পার্টিতেও যেতনা, আর ছেলেখেলা করেও এখনকার ছেলেদের মত "ড্রিং" করতোনা.

তো সেই যাই হোক, সেই কঞ্জারভেটিভ নায়কের ততোধিক কঞ্জারভেটিভ নায়িকারা কি করে জানতো যে, "মদ" খেলে কেমন গন্ধ হয়!?"

নইলে দরজা খুলেই নাক কুঁচকে নায়কের উদ্দ্যেশে সে কেন বলতো: "তুমি মদ খেয়ে এসেছো!?!!!?"

Friday, June 30, 2017

গানের আবেগ, মেয়ের আবেগ

আজ মেয়েকে পেটের উপর বসিয়ে শুয়ে শুয়ে গান শোনাচ্ছিলাম।

সাদি মোহাম্মদের সেই দারুণ গানটা:
একবার গাল ভরা মা ডাকে,
মা বলে ডাক, মা বলে ডাক,
মা বলে ডাক মা'কে!
একবার গাল ভরা মা ডাকে!!

পুরোটা গেয়ে ফেলেছি, সে চুপচাপ শুনছে। সাধারণত সে কোন গান শুরু করলেই এতা না, এতা না... বলে পোজাপতি, পোজাপতি (এইটা আপাতত তার জাতীয় সংগীত! কোথাও কোন গান শুনলেই সে পোজাপতিতে চলে যায়!) শুরু করে দেয়।

তো সে পুরোটা শুনছে কিছু বলছেনা দেখে আমি আবারো গাইছি। এবার সে মুখ ফুলিয়ে চোখ ছল ছল করে ফেলেছে...
ও কথা বলোনা..
ও কথা বলোনা... বলেই সে কেঁদে দিয়েছে।

আমি তাকে বুকে জড়িয়ে ধরেছি। মা কত্ত হচ্ছে মা!? কেন কত্ত হচ্ছে মা!?

সে তখন তার মা'কে ডাকছে "মা! মা বলে দাক!"

তার মা টয়লেট থেকে বের হবার পরই "মা! মা! বলে কোলে গিয়ে ভ্যা করে কেঁদে দিয়েছে!"

এইটুকু ছোট মেয়ে এত আবেগ কোথায় পায়!

সে আগে "ও তোতা পাখি..." শুনলেও কেঁদে দিত। এই গান তার সামনে গাওয়া যাবেনা।
আয় খুকু আয় শুনলেও তার কোন এক বাবা আর খুকুর জন্য তার খুব মায়া হয়, চোখ ছলছল হয়, সে কান্না আটকে রাখতে পারেনা...

ও কথা বোলোনা...
ও কথা বোলোনা....

৩০/০৬/২০১৭

Wednesday, June 21, 2017

ঘুম-কথা!

খোকা ঘুমলো পাড়া জুড়ালো থেকে খুকুমণি ওঠরে...
আমরা যদি না জাগি মা, কেমনে সকাল হবে..
আর্লি টু বেড এন্ড আর্লি টু রাইজ..
এই ঘুম চেয়েছিলো বুঝি...

ঘুমের তো দরকার আছেই... শুধু সাহিত্যেই না! জেগে থাকার জন্যেও ঘুম দরকার!

বাঙালী মাত্রই "অলস" ও "ঘুমকাতুরে"!
তবে কোন কোন দেশে দুপুরে খাবার পর "ভাতঘুম" দেয়া রীতিমত "কালচার"! তার নাম হচ্ছে "সিয়েস্তা"! এই নামে (Siesta) আবার একটা দেশী ঘুমের ঔষধ আছে (Bromazepam)!

তবে আমার মত যারা লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি'র নিয়ম অন্তরে ধারণ করেন কিন্তু স্কুল-গোইং বাচ্চাদের মত ঘুমান এইসব স্ট্যাডি তাদের জন্য না!

ও প্রিয় "ভিঞ্চি" নাকি ৪ ঘন্টা পরপর ২০ মিনিট! ঘুমাতেন!

অবশ্য অনেক মহামানবই এই রকম ঘুমিয়ে গেছেন। টমাস এডিসন নাকি দিনের ২৪ ঘন্টার যেকোন এক সময় ঘড়িধরে ৩ ঘন্টা ঘুমিয়ে নিতেন!

অবশ্য এই ঘুম না দিলে তিনি কী করে "বাতি" আবিষ্কার করতেন!? বাতির সলতে হিসেবে তিনি ভেড়ার লোম থেকে সোনার তার.. হেন দ্রব্য নাই ব্যাবহার করেন নাই! (সময় তো লাগবেই) তিনি নাকি ৪০০+ অবিষ্কারের পেটেন্ট নিয়েছিলেন যা তার সময়ে সার্বাধিক! তার একটা প্রজেক্ট ছিল "টেলিপোর্টেশন" মানে "কোন বস্তুকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় তারদিয়ে পাঠানো"!!

যাইহোক এই লিস্টি লম্বা!

আবার যারা সারাদিন নাক ডেকে ঘুমাতেন এবং ঘুম থেকে যে অল্প সময় জেগে ছিলেন তাতেই পৃথীবি তার নাম মনে রেখেছে সেই লিস্টিও কম না! "ঘুমকাতুরে"দের আর পালে হাওয়া দিয়ে লাভ নেই তাই সেই লিস্টি দিচ্ছিনা!

২ দিনের দুনিয়া; তার দেড় দিনই তো ঘুমিয়ে কাটাই। তাও শেষঘুম দিলে তো দিলামই...😰

যারা "মানব" তারা নীচের গবেষণা মেনে চলবেন আর যারা "অতি-মানব" তারা নিজেদের মত ঘুমাবেন!

হ্যাপী স্লিপিং!

Sunday, May 28, 2017

কে গরীব?

কে গরীব!
যে সিএনজি চালিয়ে ২০০/- মিনিমাম ভাড়া নেয় সে?
যে রিক্সাওয়ালা বৃষ্টি হলেই ২০-৫০/- বেশী ভাড়া নেয় সে?
যে ফলে রঙ/কার্বাইড দেয় সে?
১ টাকা কেজি কিনে ৩৫/- কেজি সবজি বিক্রি করে সে?
যে ৫ মিনিটে ফোন মেরামত করে ২০০০/- নেয় সে?
ন্যুনতম বাস ভাড়া ২০/- নেয় যে সে?
আমি তো গরীব দেখি শুধু সেই মানুষটাকে যে জীবনের অর্ধেকের বেশী সময় নিজের মেধা দিয়ে ভূল করে "শুধু এমবিবিএস ডাক্তার" হয়ে বসে আছে!