Tuesday, September 29, 2020

পাকিস্তান না!

- মা! আমাদের কোথাও বেড়াতে যাওয়া দরকার। কোথায় যাওয়া যায় বলতো?

- আমরা পাহাড়ে যেতে পারি!

- পাহাড়ে!?

- হুম... আর চাইলে মরুভূমিতেও যেতে পারি!

- মরুভূমি! সেটা তো অনেক দূর! আমাদের দেশে তো মরুভূমি নাই!

- তাহলে কোথায় আছে? কোন দেশে আছে?

- এই মনে কর, আফ্রিকা!

- তাহলে আফ্রিকা যাব।

- আফ্রিকা তো অনেক দূর!

- তাহলে কাছে কোন দেশে আছে?

- এই মনে কর পাকিস্তান!

- না না বাবা! পাকিস্তান যাবনা! পাকিস্তান না!

- কেন বাবা!? (তড়িৎ পাকিস্তান না যাবার সিদ্ধান্ত নেবার কারণ বুঝলাম না!)

- জাননা! পাকিস্তানের মানুষ যে বাংলাদেশী মানুষদের মেরে ফেলে!


২৯/০৯/২০২০

Monday, September 28, 2020

what মানে কি?

আমি সাম্মিকে একটু পড়াশোনা শিখাচ্ছিলাম! বিষয় ইংরেজি!

বিভিন্ন শব্দের অর্থ জিজ্ঞেস করতে করতে বললামঃ
- বলতো মা!৷ What মানে কি?
- What মানে "চমকে যাওয়া"! 
- 😅😅😆


২৬/০৯/২০২০ 

Monday, September 7, 2020

রাস্তায় কুকুর থাকবে কি থাকবে না!?

এখন এমন ঘোষণা হয়েছে যে সিটি কর্পোরেশন কুকুর নিধন করবে! শহুরে কুকুর আর থাকবে না! অনেকেই বলেছেন কুকুর থাকবে কি থাকবে না তাতে তাদের নাগরিক জীবনের কিছু এদিক সেদিক হবে না!
তবে আমার ক্ষেত্রে এটি ভিন্ন!

রাস্তায় কুকুর না থাকলে আমার যে ভয়ানক সমস্যাটা হবে সেইটা হচ্ছে রাস্তায় বের হলেই আমি আর আমার মেয়ে কুকুর খুঁজি! সেই "দগ" বয়স থেকে সে এখন এই "কুকুর" পর্যন্ত আমি মেয়েকে নিয়ে কুকুর দেখি। তারা একা কেন থাকে, ওদের মাম কোথায়, রাগ করে ওরা চিৎকার করছে, গাড়িতে থাকলে ওরা আমাদের থেকে "পিছিয়ে যায়" এগুলোই আমাদের বিষয়! 

এখন অবস্থা এমন আমি রাস্তায় একা হাঁটলেও মেয়ের সমান আগ্রহ নিয়ে কুকুর দেখি। 

তাই আমার জন্য বিরাট সমস্যা!

০৭/০৯/২০২০

Friday, July 31, 2020

কোটি কোটি এবং কোটি

খবর: করোনা বিডি অ্যাপ বানাতে খরচ পাঁচ কোটি! 

৫ কোটি!

আমরা দেশের মানুষ এখন মোটামুটি কোটি ছাড়া হিসেবে করিনা! 

কোটি ছাড়া কথা হবেনা! 

এই দেশ আজ সবাইকে কোটিতে মাপে; তাই দেশে তৈরি হচ্ছে শুধু কোটিপতি!

আমার বেতন কত?
আমি বলব ০.০০৫ কোটি! 

আজ ছয় বছর চিকিৎসক হিসেবে সরকারি চাকুরী করবার পর এই বেতনে এসে দাঁড়িয়েছি! এই করোনা কালে কোন কোন সরকারী চাকুরে কতদিন অফিস করেছেন, কে ফ্রন্টলাইন ব্যাক লাইন দেখেছেন সে হিসেবে আমি যাচ্ছিনা (কেউ একজন ফেসবুকে লিখেছিলেন তিনি সাড়ে তিনমাস পর তার অফিসে ঢুকেছেন!), আমি অন্যান্য বৈষম্যের কথা বলছি না, শুধু বলতে চাই এই কয়েকমাস আমি নিয়মিত অফিস করেছি, আমার মত প্রায় সব চিকিৎসক! নিজের পরিবারকে ঝুঁকিতে ফেলেছি, আক্রান্ত হয়েছি! 

কিন্তু বিমিনয়ে কেউ একটু ইতিবাচক কথাও বলেনি! রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বারবার অবহেলিত আমাদের চিকিৎসকেরা! 

আমি লিখে দিতে পারি এই মহামারীর পর এই দেশ থেকে চিকিৎসক হিসেবে দেশত্যাগের পরিমাণ কয়েকগুন বেড়ে যাবে! সবচাইতে ঝুঁকিতে থেকে, বিনা প্রণোদনায়, বিনা বাক্যব্যয়ে যারা কাজ করতে রাজি থাকেন তাদের চাহিদা বাইরের বিশ্বে বেশি হবে এইটাই স্বাভাবিক! 

আজ পর্যন্ত খুব অল্প সংখ্যক মানসম্পন্ন প্রকৌশলীকে এই দেশ ধরে রাখতে পেরেছে সেই স্রোতে এইবার "আরও পরিশ্রমী ও দক্ষতর জনবল"; চিকিৎসকেরা যুক্ত হবেন। আরেকটু প্রতিযোগিতা করলেই তারা বাইরের পৃথিবীতে সর্বোচ্চ সম্মান নিয়ে বাঁচবেন!

এই দেশে যারা কোটির হিসেব করেন তারা কি কখনো হিসেব করেন কত কোটি মেধাবী দেশ ছেড়ে গেল! 

যারা এই দেশটাকে সত্যিকার অর্থেই কিছু দিতে পারত তাদেরকে দেশ সেই সুযোগ দিচ্ছে না! তারা কেন তাদের উজাড় করে দেশকে দেবেন!? তারপরেও দিয়েছেন, মৃত্যুর মিছিলে চিকিৎসক ও তাদের পরিবারের তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে! কে তার খবর রাখে!

এই করোনা কলে এই দেশের সাধারণ চিকিৎসকেরা যে আত্মত্যাগ করেছেন তাতে তাদের জাতীয় বীর ঘোষণা করে আক্ষরিক অর্থেই "মাথায় তুলে নাচা উচিত"! 

ছোটবেলায় পড়েছিলাম "যে দেশে গুণের সমাদর নেই সেই দেশে গুণী জন্মাতে পারে না"!

এই কথাটা যারা পড়েছেন, মনে রেখেছেন তারা আজ দেশে অনাহুত, আর যারা ভুলে গেছেন বা পড়েননি তারা আজ এত উচুতে যে তাদের ধরা ছোয়া তো দূরে, ঠিকঠাক দেখাও যায়না! 

সাত কোটি সন্তানেরে হে মুগ্ধ জননী! 
আবার "কোটি"! 

৩১/০৭/২০২০

Wednesday, July 1, 2020

বাবা, সাম্মি আর ল্যাপটপ

আমার কন্যা আমাকে ল্যাপটপের সামনে এতটাই বসে থাকতে দেখে যে আরও দেড় বছর আগে যখন তাকে শিখাচ্ছি, বলত মা নামের নাম কি? মাম কি করে? বাবার নাম কি? বাবা কি করে?
সব যায়যায় ঠিকঠাক থাকলেও বাবা কি করে?
তার বাবা নাকি লাত্যপ চালায়!
মাম দকতের, হসপিটালে যায় আর বাবা ল্যাত্বপ চালায়! 😥

কোয়েকদিন আগে হঠাৎ করে সে বলছে:
আচ্ছা বাবা! আমার ল্যাপটপে মুভি হিয়না কেন?
(আগের দিন তাকে নিয়ে "ভূতের মুভি" দেখেছি! বুলবুল!)

তবে আমি তাকে আশ্বস্ত করেছি, বাবার ল্যাপটপ বেশি ভালো না, বড়; দুষ্টু কারেন্ট লাগে, ওজন - নিয়ে খেলতে কষ্ট হয়! 

আমার মেয়ে বলেছে তার ল্যাপটপ বাবারটার চাইতে ভালো; পিংক কালারের, অনেকগুলো বাটন, ওয়ান টু বলে, এবিসি বলে, গানও গায়, আবার অনেকগুলো ছবিও আছে! শুধু বাবার ল্যাপটপের মত "মুভি" হয়না!

তবে বাবা যেন কান্নাকাটি না করে! সে বড় হলে বাবাকে তার মত একটা ভালো ল্যাপটপ কিনে দেবে! 

০১/০৭/২০২০

Monday, May 25, 2020

বই পর্যালোচনা: বুয়েটকাল - শাকুর মজিদ

বইটি স্থপতি শাকুর মজিদের লেখা। তার বুয়েটের সময় নিয়ে মাঝে মাঝেই তিনি বিভিন্ন স্মৃতিচারণমূলক লেখা লিখতে হয়েছে বিভিন্ন অ্যালামনাই এর জন্যে, সেসব লেখার একটা সংকলন করে এই বই। তাকে ব্যক্তি হিসেবে বেশ গোছানো অবস্থায় আবিষ্কার করি এই বই পড়ে, অন্তত এই মাত্রার একটা বই প্রকাশ করতে পারার জন্যে হলেও।

১৯৮৫ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত তিনি বুয়েটে পড়েছেন। এমনিতেই স্থাপত্যে কোর্স ৫ বছরের, যেখানে অন্যসব কৌশল ৪ বছরের; তার উপর লেখালেখি, সাংবাদিকতা এগুলো নিয়ে ব্যাস্ত থেকে এক বছর পিছিয়ে গেছেন। সামরিক সরকারের যাঁতাকলে পড়েও আরও কিছু সময় সেই সময়ের সব ছাত্রদেরই নষ্ট হয়েছে। এতকিছুর পরেও তিনি জীবনে একজন সফল মানুষ, আর সফল মানুষের জীবনকথা পড়তে ভালোই লাগে। সেগুলোর ভাষাও হয় আশাজাগানিয়া।

দারুণ সহজ ভঙ্গিতে সাবলীল লেখা, পড়তে বেশ আনন্দ হয়েছে। নিজে বুয়েট আর্কিতে পড়ার সুযোগ পেয়ে পরে মেডিকেলে পড়েছি কিন্তু আমি নিজেকে এখনো আবিষ্কার করি "আর্কি মেটেরিয়াল" হিসেবে! আমি এখনো আঁকতে, কিছু লিখতে পছন্দ করি, ছবি তুলতে পছন্দ করি, এইসব কাজ ঠিক ডাক্তারদের সাথে যায়না; মানে এই বাউন্ডূলে স্বভাব। সেজন্যে হয়তো এই লেখা পড়ে কিছুটা আলাদা ভালোলাগা কাজ করেছে।

বইয়ে সেই সময়ের কিছু আভাস পাওয়া যায়। একটা সামরিক শাসনে চলা দেশের অবস্থা, একটা প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে চলেছে সেটা আচ করা যায়। প্রলংকারী ঘূর্ণিঝড়ে ত্রাণ দেয়া, সেইসময়ের ঢাকাকে আবিষ্কার করা, সমকালীন রাজনীতি এসবের চিত্র উঠে এসেছে লেখায়। তবে সবকিছু ছাপিয়ে উঠে আসে লেখকের নিজের বুয়েট এ থাকাকালীন সময়টুকু। তার টিউশনি করে চলা, সাংবাদিকতা, স্বচ্ছলতার বিলাসিতা আবার অন্যদিকে শারীরিক অসুস্থতা আর জীবন সংগ্রাম। সহপাঠী হিসেবে এখনকার খ্যাতনামা অনেককেই আবিষ্কার করি তার লেখায়। ছবিতোলায় তার দারূণ অর্জন মোহিত করে আবার বুয়েটে তার সাইকেল "পংখীরাজ" আর তাতে করে সহপাঠিনীদের সাইকেল ড্রাইভিং কোর্স করানো রোমাঞ্চ জাগায়।

প্রতিটি ছাত্রের জন্যই তার শিক্ষাজীবন এক অনন্য সময়, সেই সময়ে যদি সাংবাদিকতা, লেখালিখি, ছবি তোলা, আয়োজনের দায়িত্বে এগুলোকে সাথে করে চলা যায় তবে সেই সময় হলে ওঠে সত্যিকারের জীবন্ত। সেই সময়ের স্মৃতিচারণ ও তাই দারুণ সুখপাঠ্য!

১৪/০৫/২০২০

Saturday, May 23, 2020

সাম্মি নামাঃ ঘ তো কেমন বুড়ো!

সাম্মিকে মাম পড়াচ্ছে...
একটা বর্ণ মেলানোর খেলা আছে বইতে, এরপর কি হবে সেই বর্ণ কি সেটা খুঁজে পেতে হবে।

ক, খ, গ এর পর ঘ এর বেলা আসতেই
সাম্মি বলে উঠলোঃ
 - ঘ তো কেমন বুড়ো!

(একটা বর্ণ যে বুড়ো দেখাতে পারে সেটা শিশুরা ছাড়া বোধকরি কেউ ভাবতে পারেনা বা ভাবার ব্যাপারটা হারিয়ে ফেলে!)

২৩/০৫/২০২০ 

Friday, May 22, 2020

সাম্মি - বাবার কথোপকথন

দুরন্ত টিভিতে মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শেখ মুজিবের জীবিনের ছোট ছোট ঘটনা কিছু ছবির সাথে দেখাচ্ছিল। এটা বেশ কয়েকটা চ্যানেলেই দেখায়, তবে দুরন্ততে প্রায়ই দেখায়। অবশ্য আমাদের বাসার দুরন্ত ছাড়া কিছু চলছে না বলে হয়ত বাকি চ্যানেলে বেশী দেখায় না কম দেখায় সেটা বলা যাচ্ছেনা।

- বাবা! রাজনীতি কি?
- ম... রাজনীতি হচ্ছে "রাজার নীতি"!
- মানে?
- এই মনে কর একটা দেশে রাজা থাকে না। সেই রাজাটা তার দেশকে চালানোর জন্য, দেশের ভালো করার জন্য কিছু নিয়ম থাকে... এই যেমন দুষ্টুদের সাজা দিবে, যারা ভালো তাদের পুরষ্কার দিবে, রাস্তাঘাট সুন্দর করে বানাবে, প্রজাদের যেন কষ্ট না হয় সেই ব্যবস্থা করবে, ছোটদের জন্য স্কুল বানাবে... রাজার এইসব করার নিয়ম মানেই রাজনীতি!

(কিছুমাত্র দেরী না করে... )
- এইসব করলে জেলে যেতে হয়!?
- না! কেন? এই কথা কেন মনে হল!?
- তাহলে বঙ্গবন্ধু এইসব করত না?
- হ্যাঁ করত তো!
- তাহলে বঙ্গবন্ধুকে জেলে যেতে হয়েছিল কেন!?

(ঐ টিভির জের...!)

কি করে যে বলি বঙ্গবন্ধুকে কেন জেলে যেতে হয়েছিল!?
কি করে বলি যে আমরাই তাকে মেরে ফেলেছিলাম রে মা!

২২/০৫/২০২০

সাম্মির মেশিন আবিষ্কার

আজকে সে একটা মেশিন আবিষ্কার করেছে। দরজার পাশে ঝোলানো মশারি খাটানোর সুতার সাথে একটা খালি কোকের বোতল আর সেই সুতা দরজার ছিটকিনির সাথে বেঁধে তৈরী হয়েছে তার মেশিন! (এই মুহুর্তে সে তার মেশিনের ছবি তুলছে দাদাভাই আর দাদুকে দেখানোর জন্য)

মেশিনের কাজ হচ্ছে প্রায় বন্ধ করে তার ফাক দিয়ে সে তার চিরুনি এগিয়ে দেবে, ওপাশ থেকে কেউ সেটা ধরে নাড়াবে আর তখন তার বোলত নড়বে (যেটা বাতাসে এমনিতেই নড়ছিল), তাতে করে যে চিরুনি নাড়াচ্ছিল তার "ওয়েট" বোঝা যাবে!!

এই প্রকৃয়ায় সে মাত্রই তার দাদাভাইয়ের "ওয়েট" বের করেছে!

সেটা হচ্ছে ছয়!

ছয় কি সেটা অবশ্য জানা যায়নাই!

একটু আগে সে তার যন্ত্রের মান দিয়েছে! "ইউ এস পি"!!
এইটাই তার যন্ত্রের নাম!
(আমি জিজ্ঞেস করলাম,
- মা এইটার মানে কি?
- তুমিই বল! তুমি তো সব জানো! তোমার তো অনেক বুদ্ধি!)

২২/০৫/২০২০

Thursday, May 21, 2020

করোনা, আমফান আর আমাদের আস্ফালন

মানুষ পুরো পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় এনেছে। সবকিছু আজ আংগুলের ডগায়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এখন উন্নতির শিখরে। মানুষের অহংকার আর দম্ভের শেষ নাই।

সেই মানুষ আজ সামান্য ভাইরাসের কাছে অসহায়। কেউ কি ভেবেছিল এই আধুনিক যুগে, এই বিজ্ঞানের জয়জয়কার অবস্থায় একটা সামান্য ভাইরাস পুরো পৃথিবীর সব সেরা শক্তিকে, সেরা বুদ্ধিকে, সেরা ব্যবস্থাকেও অসহায় করে দেবে।

যে বাতাস আমাদের প্রাণ জুড়ায়, বায়ুসমুদ্রে ডুবে থেকে যে বাতাস থেকে অকক্সিজেন পাই আজ সে বাতাসকেই ভয় পাচ্ছি! ছেঁকে শ্বাস নিচ্ছি!

সেই সামান্য বাতাসই যখন জোরে বইছে তখন এই ঢাকায় শক্ত দালানে বসে ভীত হচ্ছি!

অথচ এই বাতাস আসছে আরও ৪০০ কিলোমিটার দূর থেকে যেখানে মানুষ আছে, আর তারাও সবাই এমন ইটের দালানে নেই; অনেকের হয়ত ঠুনকো টিনের চাল!

এই বাতাস বয়ে আসছে সমুদ্রের ওপর দিয়ে, বিশাল জলরাশিকে সে উন্মত্ত করে তুলেছে! এতটাই তার শক্তি যে, সে সেই বিশাল জলরাশিকে সাগরতীরের ওপর দিয়ে ১২-১৪ ফুট পর্যন্ত উচ্চতা নিয়ে আছড়ে পড়তে পারে!

এসবকিছুর পরেও কি আমরা মানুষেরা বুঝব না যে, আমরা কতটা অসহায়! কতটা ক্ষুদ্র! কতটা সীমিত আমাদের শক্তি!

আর এরপরেও কি আমরা এইসব মহাশক্তির প্রতি অনুগত হব না! সেই সর্বশক্তির প্রতি নতমস্তক হব না!? এখনো কি আমরা পৃথিবীতে দম্ভ করে বেড়াবো!?

২১/০৫/২০২০

Friday, May 8, 2020

আমিই কি তবে ভুল !?

যবে থেকে একটু বুদ্ধিশুদ্ধি হইছে; হালকা বুঝতে শিখছি, শুধু মনে হয়: "নাহ্, এইটা তো হবার কথা না... এমন তো নিয়ম না... সত্যিকারের আলোর পথ তো এইটা না...!"

বারবার সত্য মনে হয় কবিতার এই লাইনগুলো:
"আমি জানি সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে!"
" অদ্ভুত উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ!"

তারপরেও তো দেশ টিকে আছে, থাকে, থাকছে...
সবাই যে যার মত ভালই আছে, বেঁচে আছে, ফুর্তি করছে, জীবনকে "ইঞ্জয়" করছে...

কষ্ট পাচ্ছি শুধু আমি আমার "চিন্তা" নিয়ে!

তবে কি আমিই ভুল?

নাকি আমার নতুন পরিচয় নেবার সময় হয়েছে..."বুদ্ধিজীবী"! 🤣

For god sake hold your "love" and let me "use my tongue"!

০৮/০৫/২০২০

Friday, February 14, 2020

আমার বসন্ত ১৪২৬

চারিদিকে বসন্তের আগমনী ধ্বনি! 
ঋতুরাজ বসন্ত!
আহা! আজি এ বসন্তে, কত ফুল ফোটে! কত বাঁশি বাজে! কত পাখি গায়!
বসন্ত এসে গেছে...

গুটি বসন্ত নাকি জল বসন্ত এসেছে সে প্রশ্ন করবেন না মশাই বসন্ত তো এসে গেছে!

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, একটু "মুখবই"(facebook) খোলা না রাখলে,  দৈনিক প্রত্রিকার বাংলা তারিখ না দেখলে বা "তোমরা বলে না দিলে" বুঝতেই পারতাম না যে "বসন্ত" এসেছে! অনেকে আবার বাংলা ক্যালেন্ডার আর দিন ক্ষণের ব্যবচ্ছেদ-এর ব্যাপারটা জানেন না;  ফলে আগের মতই "১৪ তারিখের আগের দিন" মানে গতকাল পালন করে বসে আছেন! 

আমার ছোট্ট মেয়ের কিছু পছন্দের গান আছে। তার ভেতর "ফাগুনের মোহনায়" আর "বসন্ত এসে গেছে" এগুলো আছে।  একদিন সাম্মি বাবাকে প্রশ্নই করে ফেলল: 
: বাবা! বসন্ত এসে গেছে; বসন্ত আসলে কি হয়?
(আমি মনে মনে খুশি! যাক একটা বেসিক প্রশ্ন হয়েছে! কিছুটা "natural rules & order" বুঝিয়ে দিই!)
বললাম: এই যে গানে বলেছে না! আহা আজি এ বসন্তে..  বসন্ত আসলে চারিদিকে অনেক রঙিন ফুল ফোটে!  অনেক পাখি সেই ফুল দেখে আনন্দে গান গায়! শীত পালাই পালাই করে আর সবার মনে খুব আনন্দ হয়!

কিন্তু আমি জানি এগুলো বলেও ওকে সত্যিকারের বসন্তের ব্যাপারটা বোঝানো যাচ্ছে না! 

যেমন ছোটবেলায় ক্লাস ওয়ানের সম্ভবত একটা বই ছিল; "আমার বই"; সেখানে সব ঋতুর নাম ছিল আর নামের পাশেই একটা "ক্যারেক্টারিস্টিক" ছবি। সেখানে গ্রীষ্মকালে ফেটে যাওয়া মাটি আর আম কাঁঠালের ছবি, বর্ষায় ঘন বরষা সাথে ব্যাঙের ডাক, শরতে সাদা কাশফুলের ওপরে পরিষ্কার নীল আকাশে সাদা সাদা শুভ্র মেঘ, শীতকালে খেজুর গাছে হাড়ি, হেমন্ত সম্ভবত পালতোলা নৌকার ছবি ছিল। আর বসন্তের ছবিতে গাছে গাছে পাখি, বনে বনে ফুল বোঝাতে একটা বনের মাঝে  কোন এক বালক মনের সুখে দাঁড়িয়ে আছে, চারদিকে ফুল ফুটেছে আর গাছের ডালে পাখি বসে আছে! 

আমি বললাম: তুমিতো চারিদিকে অনেক গাছ দেখতে পাচ্ছো না। অনেক গাছ থাকলে তুমি দেখতে পেতে চারিদিকে অনেক ফুল ফুটেছে! তখনই বুঝে ফেলতে বসন্ত এসে গেছে! আর অনেক পাখির ডাক শুনতে! 

ইট কংক্রিটের শহরে তার "দুইমাত্র" জানালাই যেখানে কয়েকমাস ধরে দেয়ালে এসে আটকে গেছে সেখানে ফুল সে দেখেনা এটা সত্যি কিন্তু "পাখির ডাকের" কথা উঠতেই সে বলে উঠলো:
: না আমিতো পাখির ডাক শুনেছি! এই যে সকালবেলা অনেক পাখি ডাকাডাকি করে! চড়ুই পাখি! তারপর কাক!...

পাখিদের সারিতে দ্বিতীয় নামটাই "কাক"!

এইট কংক্রিটের জঞ্জালে বেড়ে ওঠা শিশুদের জন্য পাখি প্রথম নামটাইতো কাক হবার কথা ছিল! তারা প্রকৃতির অন্য কোনো অনুষঙ্গ দেখুক না দেখুক আকাশ দখলে নেতা প্রচুর কাক আর রাস্তা দখলে নেয়া কুকুর; এদুটো প্রাণীকে তারা দেখবেই! এরাও "প্রকৃতির সন্তান", আমার এদের উপর কোন বিদ্বেষ নেই কিন্তু সেই "প্রকৃতি" কোথায়!? 

চারিদিকে বসন্তের যে পালন আর এখন ১৪ ফেব্রুয়ারির  সাথে বাসন্তী রঙ মিলে যাওয়ার কারণে, ঋতুরাজ বসন্তের ব্যাপারটার ঢাকা পড়ে যাবে হয়ত অন্য রঙে! আমাদের শিশুরা, কিশোর-কিশোরীরা বড় হয়ে উঠবে বসন্ত মানে "ভালোবাসার সময়" ভেবে! 

আমি আমার শিশুকে, আমাদের শিশুদের একটা সত্যিকারের বসন্ত দেখতে পারলাম না! এ আমার বড় আফসোস! এখন আমি আকাশ দেখতে পাইনা কিন্তু আমি আকাশ দেখেছি, আমি জানি "আমার এক মস্ত আকাশ আছে" কিন্তু আমার শিশু তো জনলোই না ওর আকাশ, ওর বসন্ত, ওর ফুল আর পাখিদের আমরা চুরি করে ফেলেছি! ওরা আর কোনদিন সেটা খুঁজে পাবেনা! ওরা জানবেই না ওদের কি হারিয়ে গেছে, খুঁজবে কেন!?

যাক এসব কথা। চারিদিকে কত রঙ, রঙ থেকে রঙ্গ! আমিই শুধু হাহাকার খুঁজি!

রবি বাবুকে স্মরণ করি:
সুখে ছিল যারা, সুখে থাক তারা, সুখেরই বসন্তে সুখী হোক ধরা। 

১৪/০২/২০২০

Sunday, January 5, 2020

মেয়ের প্রথম স্কুলে যাওয়া

আজ প্রথম সাম্মি সোনা স্কুলে গিয়েছে! 
সকালে উঠতেই পারছিলনা, তার মা অসম্ভব ধৈর্য নিয়ে তাকে উঠিয়েছে, খাইয়েছে, স্কুল ড্রেস পরিয়ে স্কুলে নিয়ে গিয়েছে। আজকে সে ছুটি নিয়েছিল, আমিও বাসায় ছিলাম তার সাথে স্কুলে যাবার জন্য। মাও ছিল সাথে। প্রথম স্কুলের দিনে সে ছিল গম্ভীর! 
 
হাসো মা!
বলার পর একটুখানি হেসেছিল! 
বাকি পুরোটা সময় সে ছিল খুব গম্ভীর! 

বাসায় এসে যখন তাকে তার মা বলল: "সাম্মি তো অনেক সাহসী বেবী! মা তো ভেবেছিল সাম্মি কান্নাকাটি করবে!"
মেয়ে বলে কি: "আমার অবশ্য একটু একটু কান্না পাচ্ছিল!"

সে কেদেই ফেলত, তার "পার্সোনালিটি"র কারণে পারেনাই। মাম তাকে বলেছে "কাদে বোকা বেবিরা"! আর সাম্মি তো বোকা বেবী না! সাহসী বেবী!