কে গরীব!
যে সিএনজি চালিয়ে ২০০/- মিনিমাম ভাড়া নেয় সে?
যে রিক্সাওয়ালা বৃষ্টি হলেই ২০-৫০/- বেশী ভাড়া নেয় সে?
যে ফলে রঙ/কার্বাইড দেয় সে?
১ টাকা কেজি কিনে ৩৫/- কেজি সবজি বিক্রি করে সে?
যে ৫ মিনিটে ফোন মেরামত করে ২০০০/- নেয় সে?
ন্যুনতম বাস ভাড়া ২০/- নেয় যে সে?
আমি তো গরীব দেখি শুধু সেই মানুষটাকে যে জীবনের অর্ধেকের বেশী সময় নিজের মেধা দিয়ে ভূল করে "শুধু এমবিবিএস ডাক্তার" হয়ে বসে আছে!
Sunday, May 28, 2017
কে গরীব?
মেডিকেল শিক্ষা: উত্তরণের পথ কোথায়
গঠনমূলক সমালোচনা সবসময়ই উন্নতির প্রধান শর্ত। এখানে যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে তা অনেকটাই সঠিক তাই বলে সমাধানের রাস্তা "বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ" অবশ্যই নয়। এখানে বলা হয়েছে সবগুলো মেডিকেল কলেজ শিক্ষার মান এক নয়, এটি কিন্তু সঠিক। এক হবার কথাও নয়। কিন্তু একটি সুনির্দিষ্ট ন্যূনতম মান থাকতে হবে। কেউ কেউ সেই মানের চাইতে ওপরে থাকলে অন্যরা মানহীন হয়ে যায়না।
যেমন দেশের স্কুল বা কলেজের ক্ষেত্রে প্রথম সারির কিছু নামই ঘুরেফিরে সবার মাথায় আসবে কিন্তু তাই বলে কি বাকিগুলো একেবারেই মানহীন? সেখানে শিক্ষার্থীরা কিছুই পড়েন না? সেগুলো বন্ধ করে দিতে হবে?
ঠিক একই ব্যাপার চিকিৎসা শিক্ষার ক্ষেত্রেও। ইতোমধ্যেই কিছু ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। স্বাস্থ্য অঅধিদপ্তরের উদ্যোগে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ মূল্যায়ন এর জন্য একটি কাঠামো প্রায় চূড়ান্ত। এটি করা গেলে আমাদের শিক্ষার মান আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে। আমরা অনলাইন বা দূরপাঠ শুরু করা হচ্ছে ফলে দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা একটি মানসম্মত পাঠ পাবে যার মধ্যে শিক্ষার্থীদের মতামতা ও প্রশ্ন করার সুযোগ থাকছে ফলে "প্রশ্ন ও উত্তর" ও অনুসন্ধিৎসার মাধ্যমে চমৎকার একটি শিক্ষার পরিবেশ তৈরীর সুযোগ হয়েছে।
আর সব বাদ দিয়ে যদি ধরেই নিই কাল থেকে ৭৫% বেসরকারি মেডিকেল বন্ধ! তবে বিভিন্ন সেশনের যে হাজাত হাজার শিক্ষার্থী আছে তাদের কি হবে? তাদের শিক্ষার অধিকার বন্ধ করার সুযোগ কি কারো আছে?
বাংলাদেশ ছোট দেশ হলেও এর বিপুল জনসংখ্যার চিকিৎসা সেবার জন্য ডাক্তারেরও প্রয়োজন, ফলে মেডিকেল কলেজ বন্ধ করে সমাধান খোজার সুযোগ নেই বরং আমাদের জন্য আশীর্বাদ যে আমরা অবকাঠামো ও অন্যান্য অনেকক্ষেত্রেই এগিয়ে আছি, এগুলোর সঠিক ব্যাবস্থাপনাই আমাদের চিকিৎসা শিক্ষাকে নতুন পথ দেখাবে।
অধঃপতন
আর কত নীচে নামাবে আমায় তুমি
নীচে নামতে নামতে নামতে আমার নাম যখন "পিয়ন" হয়ে যাবে তখনও তুমি আমায় আরো নীচে নামাবে!?
অথবা অধঃপতনে যেতে যেতে একদিন আমি "আসগর" হয়ে গেলাম...
তারপরেও তুমি আমায় বলবে "আরো নীচে ণামো"!
যে গতিতে নীচে নেমেছি তাতে আমার পার হয়ে গেছে ১৮০ দিন, আমি কি আরো "আস্তে" নীচে নামবো?
আমাকে নীচে নামিয়ে তুমি চলে যাচ্ছ আকাশে, আমি আরো নীচে নেমে যাচ্ছি... যাচ্ছি... যাচ্ছি...
তোমার সাথে আমার আপেক্ষিক নীচুতা বাড়ছে..
আমি সবাইকে "উচু" করে দিয়ে নীচে নামছি,
এমনকি নীচতলা বা তিনতলা থেকে পাচতলাতে এসেও আমি নীচেই নেমেছি।
তুমি আমাকে আরো নীচে নামতে বলছ!?
আর কত নীচে মানলে তুমি বলবে..
আর নেমো না, কারণ
আর নীচে নামা যায়না!
সুনিশ্চিত অনিশ্চিত ভবিষ্যত
আমি নিজে কখনো এইখবরগুলো শেয়ার করতে চাইনা, আমার কাছে মনে হয় এগুলো শেয়ার করাও এক ধরণের "প্রচারণা"!
এমনটা কখনোই ঘটেনা যে একটা নিউজ শেয়ার করার পর এ থেকে "শিক্ষা" নিয়ে লোকে অপরাধ কমিয়ে দেয় বরং উল্টোটাই ঘটে! সাফাতের ঘটনার পর এ থেকে "অনুপ্রাণিত" হয়ে দেখা যাবে আরো সাফাত জন্ম নেবে, শুধু তাই নয় তারা আরো "সাবধানী" হবে!
দিল্লীর বাসের ঘটনার পর কি খেয়াল করেছেন যে এইরমক ঘটনা অনেক মিডিয়ায় আসতে লাগলো। সেটা শুধু "টেম্পোরারি নিউজ ট্রেন্ড" এর কারণেই না! তখন রাত্তিরবেলা কোথাও বাসে-ট্রেনে একাকী কোন নারীকে দেখলেই অনেকের মাথায় আসবে "এইত ক্রিমিনাল হবার সুযোগ"! পিজিটিভ চিন্তা এখানে মূখ্য হয়ে ওঠেনা।
কারণ...
ব্যধিই সংক্রামক, স্বাস্থ্য নয়!
তাই আমাদের আসলে আরো গভীরে হাত দিতে হবে। কিছুদিন আগে মনে আছে কি অসহায় একটা সময় পার করেছে এই দেশের মানুষ। বাসভর্তি লোকজন থাকতেই অল্পকিছু টাকার জন্যে পুরো বাসে আগুন দিয়ে দিয়েছে কেউ, সামান্য কিছু টাকায় একটা জটলার মাঝে কেউ বোমা মেরে দিয়েছে, খুব তুচ্ছ কিছু ইস্যুতে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের শেষ সম্বলে দাউ দাউ আগুনে ধ্বংস করেছে কেউ।
এই "কেউ"এরা কারা?
তারা কি ভীনগ্রহ থেকে এসেছে নাকি চুপেচাপে পাশের বা তার একটু পাশের কোন দেশ থেকে এসেছে!?
না! তারা এই দেশেরই আলো হাওয়ায় বেড়ে ওঠা মানুষ, বাসে প্রতিদিন যাদের পাশে বসি বা বাজারে যাদের সাথে এক কাতারে দাঁড়িয়ে দরদাম করি, ভিড়ভাট্টায় যাদের সাথে গায়ের ঘাম মিলেমিশে যায় এরা তারাই!
কি সাবলীলভাবেই না আমরা নিজেরা নিজেদের স্বপ্ন ভেঙে দেই, একে অন্যের হত্যাকারী হয়ে উঠি!
কিন্তু কেন আমরা এমন বদলে গেলাম!?
যে দেশের মানুষেরা শুধু একটি ফুলকে বাঁচাবে বলে একসাথে হাতের মুঠোয় প্রাণ দিতে পারে তারা কেন এমন হবে!?
কেন?
আমরা আমাদের শেকড়টাতে বহুদিন জল-পানি দেইনা। গাছের পাতা ফুলে রঙ লাগিয়ে সুন্দর দেখাচ্ছে বটে কিন্তু ঝড় এলে গাছ টিকে থাকবে কিনা সন্দেহ দেখা দিয়েছে। ভেতরে ভেতরে আমরা বড় পচে গেছি, সুন্দর আবেগ-প্রেম-ভালোবাসা-মমতা-স্নেহগুলোকে মেরে ফেলেছি! জাগাতে হবে সেগুলো নইলে অনিশ্চিত আগামী নিশ্চিত অসুন্দর!
আমরাই বাংলাদেশ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মৃত্যু ও চিকিৎসা
খুব হতাশার সাথে খেয়াল করলাম যে বিশ্ববিদ্যালয়কে একসময় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হত, যেখান থেকে আমাদের ভাষা আন্দোলনের সূচনা, দেশের ক্রান্তিকালে যেখান থেকে প্রথমে বলিষ্ট কন্ঠ শোনা গেছে সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার সেই জায়গা থেকে অনেকদূর সরে এসেছে।
পৃথীবির সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০০ নামের তালিকা করলেও সেখানে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডকে খুজে পাওয়া যাবেনা।
নিকট অতীতে দেশের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও এই ছাত্রসমাজকে জেগে উঠতে দেখা যায়নি, দেশের শিল্প-সংস্কৃতি থেকে রাজনৈতিক চেতনার বীজপত্র বলে যে বিদ্যাপীঠকে সকলে জানত তারা এখন যে কোন ইস্যুতে ভাংচুর করে বেড়ায়, গত এক বছরের ঘটনাক্রম দেখকে দেখা যাবে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে শুরু করে সরকারি হাসপাতালগুলোতে তারা নারকীয় তান্ডব চালিয়েছে বারংবার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রের ফেসবুক পোষ্ট দেখার সৌভাগ্য হল বলেই এগুলো লিখছি। সেখানে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে তা চূড়ান্ত অশোভন এবং অবশ্যই তারা যদি নিজেদের "সভ্য" দাবী করে তবে এ ভাষা তার পরিপন্থী! (কাউকে ব্যক্তিগতভাবে আঘাত দিতে চাইছিনা বলেই কোন স্ক্রীনশট দিচ্ছিনা!)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এখানে যে ভূমিকা।নিয়েছেন তা তাকে অবিবেচক ও চূড়ান্ত হাস্যকর ব্যক্তিতে পরিণত করেছে।
আমরা কোথায় যেন পচে গেছি, গন্ধটা মাঝে মাঝে নাকে খুব লাগে। একটা সামগ্রিক অধ:পতন হয়ে গেছে কোথাও। আগে সেখানে হাত দিন। এখন প্রানপণে নিজেদের সম্মান সবটুকু হারানোর চেষ্টা করছেন, হারানো সম্মান ফিরে পেতে একটুও নয়!
ডাক্তার সমাজ আজ ক্ষুব্ধ! তাদের পরম শ্রদ্ধার জায়গাটায় একটা চূড়ান্ত অসম্মান হয়ে গেছে কিন্তু খেয়াল করেছেন, যিনি মারা গেলেন তার প্রতি কতটা সম্মান দিয়ে কথা বলছে এ ডাক্তারেরা! এর সিকিভাগও যদি আপনারা আপনাদের স্বজন-বান্ধবদের বা নিজেদের দিতেন!?
আমরা আরো "ভালোতর" বাংলাদেশ পেতাম, কারণ আমি-আপনি-আমরাই কিন্তু বাংলাদেশ!