খবর: করোনা বিডি অ্যাপ বানাতে খরচ পাঁচ কোটি!
আমরা দেশের মানুষ এখন মোটামুটি কোটি ছাড়া হিসেবে করিনা!
কোটি ছাড়া কথা হবেনা!
এই দেশ আজ সবাইকে কোটিতে মাপে; তাই দেশে তৈরি হচ্ছে শুধু কোটিপতি!
আমার বেতন কত?
আমি বলব ০.০০৫ কোটি!
আজ ছয় বছর চিকিৎসক হিসেবে সরকারি চাকুরী করবার পর এই বেতনে এসে দাঁড়িয়েছি! এই করোনা কালে কোন কোন সরকারী চাকুরে কতদিন অফিস করেছেন, কে ফ্রন্টলাইন ব্যাক লাইন দেখেছেন সে হিসেবে আমি যাচ্ছিনা (কেউ একজন ফেসবুকে লিখেছিলেন তিনি সাড়ে তিনমাস পর তার অফিসে ঢুকেছেন!), আমি অন্যান্য বৈষম্যের কথা বলছি না, শুধু বলতে চাই এই কয়েকমাস আমি নিয়মিত অফিস করেছি, আমার মত প্রায় সব চিকিৎসক! নিজের পরিবারকে ঝুঁকিতে ফেলেছি, আক্রান্ত হয়েছি!
কিন্তু বিমিনয়ে কেউ একটু ইতিবাচক কথাও বলেনি! রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বারবার অবহেলিত আমাদের চিকিৎসকেরা!
আমি লিখে দিতে পারি এই মহামারীর পর এই দেশ থেকে চিকিৎসক হিসেবে দেশত্যাগের পরিমাণ কয়েকগুন বেড়ে যাবে! সবচাইতে ঝুঁকিতে থেকে, বিনা প্রণোদনায়, বিনা বাক্যব্যয়ে যারা কাজ করতে রাজি থাকেন তাদের চাহিদা বাইরের বিশ্বে বেশি হবে এইটাই স্বাভাবিক!
আজ পর্যন্ত খুব অল্প সংখ্যক মানসম্পন্ন প্রকৌশলীকে এই দেশ ধরে রাখতে পেরেছে সেই স্রোতে এইবার "আরও পরিশ্রমী ও দক্ষতর জনবল"; চিকিৎসকেরা যুক্ত হবেন। আরেকটু প্রতিযোগিতা করলেই তারা বাইরের পৃথিবীতে সর্বোচ্চ সম্মান নিয়ে বাঁচবেন!
এই দেশে যারা কোটির হিসেব করেন তারা কি কখনো হিসেব করেন কত কোটি মেধাবী দেশ ছেড়ে গেল!
যারা এই দেশটাকে সত্যিকার অর্থেই কিছু দিতে পারত তাদেরকে দেশ সেই সুযোগ দিচ্ছে না! তারা কেন তাদের উজাড় করে দেশকে দেবেন!? তারপরেও দিয়েছেন, মৃত্যুর মিছিলে চিকিৎসক ও তাদের পরিবারের তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে! কে তার খবর রাখে!
এই করোনা কলে এই দেশের সাধারণ চিকিৎসকেরা যে আত্মত্যাগ করেছেন তাতে তাদের জাতীয় বীর ঘোষণা করে আক্ষরিক অর্থেই "মাথায় তুলে নাচা উচিত"!
ছোটবেলায় পড়েছিলাম "যে দেশে গুণের সমাদর নেই সেই দেশে গুণী জন্মাতে পারে না"!
এই কথাটা যারা পড়েছেন, মনে রেখেছেন তারা আজ দেশে অনাহুত, আর যারা ভুলে গেছেন বা পড়েননি তারা আজ এত উচুতে যে তাদের ধরা ছোয়া তো দূরে, ঠিকঠাক দেখাও যায়না!
সাত কোটি সন্তানেরে হে মুগ্ধ জননী!
আবার "কোটি"!
৩১/০৭/২০২০