Monday, May 25, 2020

বই পর্যালোচনা: বুয়েটকাল - শাকুর মজিদ

বইটি স্থপতি শাকুর মজিদের লেখা। তার বুয়েটের সময় নিয়ে মাঝে মাঝেই তিনি বিভিন্ন স্মৃতিচারণমূলক লেখা লিখতে হয়েছে বিভিন্ন অ্যালামনাই এর জন্যে, সেসব লেখার একটা সংকলন করে এই বই। তাকে ব্যক্তি হিসেবে বেশ গোছানো অবস্থায় আবিষ্কার করি এই বই পড়ে, অন্তত এই মাত্রার একটা বই প্রকাশ করতে পারার জন্যে হলেও।

১৯৮৫ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত তিনি বুয়েটে পড়েছেন। এমনিতেই স্থাপত্যে কোর্স ৫ বছরের, যেখানে অন্যসব কৌশল ৪ বছরের; তার উপর লেখালেখি, সাংবাদিকতা এগুলো নিয়ে ব্যাস্ত থেকে এক বছর পিছিয়ে গেছেন। সামরিক সরকারের যাঁতাকলে পড়েও আরও কিছু সময় সেই সময়ের সব ছাত্রদেরই নষ্ট হয়েছে। এতকিছুর পরেও তিনি জীবনে একজন সফল মানুষ, আর সফল মানুষের জীবনকথা পড়তে ভালোই লাগে। সেগুলোর ভাষাও হয় আশাজাগানিয়া।

দারুণ সহজ ভঙ্গিতে সাবলীল লেখা, পড়তে বেশ আনন্দ হয়েছে। নিজে বুয়েট আর্কিতে পড়ার সুযোগ পেয়ে পরে মেডিকেলে পড়েছি কিন্তু আমি নিজেকে এখনো আবিষ্কার করি "আর্কি মেটেরিয়াল" হিসেবে! আমি এখনো আঁকতে, কিছু লিখতে পছন্দ করি, ছবি তুলতে পছন্দ করি, এইসব কাজ ঠিক ডাক্তারদের সাথে যায়না; মানে এই বাউন্ডূলে স্বভাব। সেজন্যে হয়তো এই লেখা পড়ে কিছুটা আলাদা ভালোলাগা কাজ করেছে।

বইয়ে সেই সময়ের কিছু আভাস পাওয়া যায়। একটা সামরিক শাসনে চলা দেশের অবস্থা, একটা প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে চলেছে সেটা আচ করা যায়। প্রলংকারী ঘূর্ণিঝড়ে ত্রাণ দেয়া, সেইসময়ের ঢাকাকে আবিষ্কার করা, সমকালীন রাজনীতি এসবের চিত্র উঠে এসেছে লেখায়। তবে সবকিছু ছাপিয়ে উঠে আসে লেখকের নিজের বুয়েট এ থাকাকালীন সময়টুকু। তার টিউশনি করে চলা, সাংবাদিকতা, স্বচ্ছলতার বিলাসিতা আবার অন্যদিকে শারীরিক অসুস্থতা আর জীবন সংগ্রাম। সহপাঠী হিসেবে এখনকার খ্যাতনামা অনেককেই আবিষ্কার করি তার লেখায়। ছবিতোলায় তার দারূণ অর্জন মোহিত করে আবার বুয়েটে তার সাইকেল "পংখীরাজ" আর তাতে করে সহপাঠিনীদের সাইকেল ড্রাইভিং কোর্স করানো রোমাঞ্চ জাগায়।

প্রতিটি ছাত্রের জন্যই তার শিক্ষাজীবন এক অনন্য সময়, সেই সময়ে যদি সাংবাদিকতা, লেখালিখি, ছবি তোলা, আয়োজনের দায়িত্বে এগুলোকে সাথে করে চলা যায় তবে সেই সময় হলে ওঠে সত্যিকারের জীবন্ত। সেই সময়ের স্মৃতিচারণ ও তাই দারুণ সুখপাঠ্য!

১৪/০৫/২০২০

Saturday, May 23, 2020

সাম্মি নামাঃ ঘ তো কেমন বুড়ো!

সাম্মিকে মাম পড়াচ্ছে...
একটা বর্ণ মেলানোর খেলা আছে বইতে, এরপর কি হবে সেই বর্ণ কি সেটা খুঁজে পেতে হবে।

ক, খ, গ এর পর ঘ এর বেলা আসতেই
সাম্মি বলে উঠলোঃ
 - ঘ তো কেমন বুড়ো!

(একটা বর্ণ যে বুড়ো দেখাতে পারে সেটা শিশুরা ছাড়া বোধকরি কেউ ভাবতে পারেনা বা ভাবার ব্যাপারটা হারিয়ে ফেলে!)

২৩/০৫/২০২০ 

Friday, May 22, 2020

সাম্মি - বাবার কথোপকথন

দুরন্ত টিভিতে মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শেখ মুজিবের জীবিনের ছোট ছোট ঘটনা কিছু ছবির সাথে দেখাচ্ছিল। এটা বেশ কয়েকটা চ্যানেলেই দেখায়, তবে দুরন্ততে প্রায়ই দেখায়। অবশ্য আমাদের বাসার দুরন্ত ছাড়া কিছু চলছে না বলে হয়ত বাকি চ্যানেলে বেশী দেখায় না কম দেখায় সেটা বলা যাচ্ছেনা।

- বাবা! রাজনীতি কি?
- ম... রাজনীতি হচ্ছে "রাজার নীতি"!
- মানে?
- এই মনে কর একটা দেশে রাজা থাকে না। সেই রাজাটা তার দেশকে চালানোর জন্য, দেশের ভালো করার জন্য কিছু নিয়ম থাকে... এই যেমন দুষ্টুদের সাজা দিবে, যারা ভালো তাদের পুরষ্কার দিবে, রাস্তাঘাট সুন্দর করে বানাবে, প্রজাদের যেন কষ্ট না হয় সেই ব্যবস্থা করবে, ছোটদের জন্য স্কুল বানাবে... রাজার এইসব করার নিয়ম মানেই রাজনীতি!

(কিছুমাত্র দেরী না করে... )
- এইসব করলে জেলে যেতে হয়!?
- না! কেন? এই কথা কেন মনে হল!?
- তাহলে বঙ্গবন্ধু এইসব করত না?
- হ্যাঁ করত তো!
- তাহলে বঙ্গবন্ধুকে জেলে যেতে হয়েছিল কেন!?

(ঐ টিভির জের...!)

কি করে যে বলি বঙ্গবন্ধুকে কেন জেলে যেতে হয়েছিল!?
কি করে বলি যে আমরাই তাকে মেরে ফেলেছিলাম রে মা!

২২/০৫/২০২০

সাম্মির মেশিন আবিষ্কার

আজকে সে একটা মেশিন আবিষ্কার করেছে। দরজার পাশে ঝোলানো মশারি খাটানোর সুতার সাথে একটা খালি কোকের বোতল আর সেই সুতা দরজার ছিটকিনির সাথে বেঁধে তৈরী হয়েছে তার মেশিন! (এই মুহুর্তে সে তার মেশিনের ছবি তুলছে দাদাভাই আর দাদুকে দেখানোর জন্য)

মেশিনের কাজ হচ্ছে প্রায় বন্ধ করে তার ফাক দিয়ে সে তার চিরুনি এগিয়ে দেবে, ওপাশ থেকে কেউ সেটা ধরে নাড়াবে আর তখন তার বোলত নড়বে (যেটা বাতাসে এমনিতেই নড়ছিল), তাতে করে যে চিরুনি নাড়াচ্ছিল তার "ওয়েট" বোঝা যাবে!!

এই প্রকৃয়ায় সে মাত্রই তার দাদাভাইয়ের "ওয়েট" বের করেছে!

সেটা হচ্ছে ছয়!

ছয় কি সেটা অবশ্য জানা যায়নাই!

একটু আগে সে তার যন্ত্রের মান দিয়েছে! "ইউ এস পি"!!
এইটাই তার যন্ত্রের নাম!
(আমি জিজ্ঞেস করলাম,
- মা এইটার মানে কি?
- তুমিই বল! তুমি তো সব জানো! তোমার তো অনেক বুদ্ধি!)

২২/০৫/২০২০

Thursday, May 21, 2020

করোনা, আমফান আর আমাদের আস্ফালন

মানুষ পুরো পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় এনেছে। সবকিছু আজ আংগুলের ডগায়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এখন উন্নতির শিখরে। মানুষের অহংকার আর দম্ভের শেষ নাই।

সেই মানুষ আজ সামান্য ভাইরাসের কাছে অসহায়। কেউ কি ভেবেছিল এই আধুনিক যুগে, এই বিজ্ঞানের জয়জয়কার অবস্থায় একটা সামান্য ভাইরাস পুরো পৃথিবীর সব সেরা শক্তিকে, সেরা বুদ্ধিকে, সেরা ব্যবস্থাকেও অসহায় করে দেবে।

যে বাতাস আমাদের প্রাণ জুড়ায়, বায়ুসমুদ্রে ডুবে থেকে যে বাতাস থেকে অকক্সিজেন পাই আজ সে বাতাসকেই ভয় পাচ্ছি! ছেঁকে শ্বাস নিচ্ছি!

সেই সামান্য বাতাসই যখন জোরে বইছে তখন এই ঢাকায় শক্ত দালানে বসে ভীত হচ্ছি!

অথচ এই বাতাস আসছে আরও ৪০০ কিলোমিটার দূর থেকে যেখানে মানুষ আছে, আর তারাও সবাই এমন ইটের দালানে নেই; অনেকের হয়ত ঠুনকো টিনের চাল!

এই বাতাস বয়ে আসছে সমুদ্রের ওপর দিয়ে, বিশাল জলরাশিকে সে উন্মত্ত করে তুলেছে! এতটাই তার শক্তি যে, সে সেই বিশাল জলরাশিকে সাগরতীরের ওপর দিয়ে ১২-১৪ ফুট পর্যন্ত উচ্চতা নিয়ে আছড়ে পড়তে পারে!

এসবকিছুর পরেও কি আমরা মানুষেরা বুঝব না যে, আমরা কতটা অসহায়! কতটা ক্ষুদ্র! কতটা সীমিত আমাদের শক্তি!

আর এরপরেও কি আমরা এইসব মহাশক্তির প্রতি অনুগত হব না! সেই সর্বশক্তির প্রতি নতমস্তক হব না!? এখনো কি আমরা পৃথিবীতে দম্ভ করে বেড়াবো!?

২১/০৫/২০২০

Friday, May 8, 2020

আমিই কি তবে ভুল !?

যবে থেকে একটু বুদ্ধিশুদ্ধি হইছে; হালকা বুঝতে শিখছি, শুধু মনে হয়: "নাহ্, এইটা তো হবার কথা না... এমন তো নিয়ম না... সত্যিকারের আলোর পথ তো এইটা না...!"

বারবার সত্য মনে হয় কবিতার এই লাইনগুলো:
"আমি জানি সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে!"
" অদ্ভুত উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ!"

তারপরেও তো দেশ টিকে আছে, থাকে, থাকছে...
সবাই যে যার মত ভালই আছে, বেঁচে আছে, ফুর্তি করছে, জীবনকে "ইঞ্জয়" করছে...

কষ্ট পাচ্ছি শুধু আমি আমার "চিন্তা" নিয়ে!

তবে কি আমিই ভুল?

নাকি আমার নতুন পরিচয় নেবার সময় হয়েছে..."বুদ্ধিজীবী"! 🤣

For god sake hold your "love" and let me "use my tongue"!

০৮/০৫/২০২০