Monday, August 28, 2017

মেয়ের কাছ থেকে শিখি

আমার মেয়ে কিছু নিতে বা করতে খুব জেদ করলে আমি বলি, "বাবা তোমাকে শিখাই"
এরপর তাকে সেটা ধরতে দিই, সে আর জেদ করেনা। তো এইবার মেয়েই আমাকে শিখালো!
আমি উ'টুবে (মেয়েকে এইটা দেখিয়ে খাওয়াতে হচ্ছে 😖 বলে চিনে ফেলেছে) শুধু Arrow Key আর F এর ইউস জানতাম। মেয়ে কয়েকদিন আগে আমাকে "J, K, L" কী এর ইউস শিখাইছে, তার চেয়ে বড় কথা 1 to 0  numerical key এর যে চমৎকার একটা ইউস আছে সেইটা আমি জানতামই না মেয়ে না শিখাইলে! (Key গুলা ট্রাই করেই দেখে নিন, যদি না জানেন!)
সে মাউসের লাল আলোর জন্য সবসময় মাউস চায়, আজ কাজ করতে পারছিলাম না তাই ইউএসবি খুলে দিয়েছিলাম। সে আমার কাছে সাহায্যও চায়নাই, নিজে নিজে মাউসের ইউএসবি কানেক্ট করে নিয়েছে! 😎

Thursday, August 24, 2017

সমস্যা নাকি ব্যবসা

আজ সারাদিনে বিভিন্ন কারণে আমাকে মোট ৫ বার ভিন্ন ভিন্ন রুটের বাসে উঠতে হয়েছে এবং আমি হঠাৎ করেই একটা ব্যাপার খেয়াল করলাম সেইটা হচ্ছে ছোট্ট চিরকূট দিয়ে সাহায্য প্রার্থনার হিড়িক।
এমনিতেই অনেকদিন ধরেই মাঝে মাঝে বাসে এগুলো দেখা যায়, ছোট চিরকুট সাথে কখনো একটা চকলেট। তেমন কিছু মুখে বলা হয়না, বসে থাকা সবার কোলে একটা করে দিয়ে যায় আবার পেছনে থেকে তুলে নিয়ে নেমে যায়। এগুলো ঈদ উপলক্ষে বাড়ে সেইটাও ঠিক কিন্তু আজ ৫ বাসের ৪ টাতেই এই চিরকুট পেয়েছি, বাকি একটায় লম্বা ফাইলসহ সাহায্য চাওয়া!
চিরকুট যারা দিচ্ছিল তাদের একজনের বয়স পাচ কি ছয়, গুলশান থেকে বাসে উঠলো, কথা বলতে চাইলে আমাকে পাত্তাও দিলোনা। আরেকজন ছিল ১৪-১৫ বছরের এক ছেলে, দেখলেই বোঝা যায় মারদাঙ্গা করে বেড়ায়। গালে কপালে কাটা দাগ, স্ট্যাইল করে চুল কাটা, ড্যাম কেয়ার ভাব! বাকি দুইজনের একজন একটা মেয়ে ১২-১৩ বছরের আরেকজন অল্পবয়েসী মা তার কোলে দেড় বছরের শিশু!
হঠাৎ করেই এই সাহায্য প্রার্থনার হিড়িক কি অন্য কোনোকিছু নির্দেশ করে!?
একে তো এদের অনেককেই দেখে খুব "সাহায্যপ্রার্থী" বলে মনে হয়নাই, আর একইসাথে বিভিন্ন রুটে এদের উপস্থিতি প্রমাণ করে এরা পরিকল্পিত। কেউ আড়ালে থেকে এদের দিয়ে "সাহায্য-ব্যাবসা"টা করাচ্ছে। টাকা ভাগাভাগি হয়ে যাচ্ছে!
এর মানে এই নয় যে এদের কেএ টাকা-পয়সা দিবেন না, সাহায্য করবেন না! আসলে খুব বেশী লোকে করে তাও না, কিছু বয়ষ্ক আর মেয়ে-মহিলারাই করে, যাদের হঠাৎ এদের দেখে মায়া জন্মে, যারা এসব দেখে অভ্যস্ত নয়।
কতরকম ব্যাপারস্যাপারই না চলে আমাদের চারপাশে, এই ঢাকায়।
২৪.০৮.২০১৭

সাম্মী কি করেছে এটা!?

আমার মেয়ে তার এই ছোট্ট পুতুলের ধ্বংসাবশেষ দেখিয়ে বলছে:
"আমি কি করেছি এতা!?"
"সিলাই কয়ে দাও!"
(এগুলোর হাত পা জামা কাপড় সব সেইই আলাদা করে ফেলেছে! তাও অনেকদিন আগেই!)
২৪.০৮.২০১৭

রোজনামচা - ২৩.০৮.২০১৭

আসলে তারিখটা ২৪ হওয়া দরকার ছিল। বাসায় ফিরতে দিন পার হয়ে গেল!

টিটু স্যারের কাছে মায়ের রিপোর্টগুলো দেখাইতে গেছিলাম, প্রায় ০১.৩০ ঘন্টা অপেক্ষা করে দেখাতে পারলাম। যেতে বেশী বেগ পেতে হয়নাই কিন্তু জ্যাম ছিল। আসার সময় ভেবেছি বাস পেলে রাস্তা তো ফাকা। কিন্তু পথে নেমে দেখি পল্টন মোড়ে বিশাল জ্যাম। সব ট্রাক আর কিছু লরি বের হয়ে গেছে রাস্তায়, এই রাতেও ট্রাফিক একজন দাঁড়িয়ে। বাস থেকে নেমে গেছি প্রেসক্লাব মোড়েই। হেটে সামনে এসে দেখি অবস্থা এই। কোন চ্যানেল থেকেই বাস আসছে না, সব ঘুরে যাচ্ছে নয়ত জ্যামে আটকে আছে!

তাই অগত্যা একটা রিক্সা নিলাম, রিক্সা যখন দৈনিক বাংলা থেকে ডানে বংগভবনের দিকে মোড় নিলো তখন রাস্তার দুপাশে অনেকেই রাতের ঘুমের আয়োজন করছে, কিছু ছেলেপেলে কোন নেশার আয়োজনে আছে, একটা কোনে দেখলাম পলিথিন খাটিয়ে উঠতি বয়সী এক মেয়ে কোন এক আয়োজন করছে যেখানে মশার কয়েলের এন্তেজাম আছে! মেয়েটা তার অর্থনৈতিক অবস্থার তুলনায় স্থূলকায়, হয়ত ওসিপির এফেক্ট!

হায় জীবন!

এ ডৃশ শেষ না হতেই সামনে আগোতেই দেখি এক মা তার দুধের শিশুকে নিয়ে একেবারে রাস্তায় বসে গেছে, তার সাথে কয়েকজন ফুটপাথ থেকে পা ঝুলিয়েছে রাস্তায়, যেন বাড়ির উঠানে তারা ভরা আকাশের নীচে গল্পের আসর বসেছে! বাচ্চাটা খেতে খেতে ঘুমিয়েই গেছে, শিথিল ধুলোমাখা পা দুটো মায়ের কোল থেকে ঝুলে আছে, মা একহাতেই আলস্যে ধরে আছে শিশুকে। বাবা কে বোঝা গেলনা যারা ছিলো সবাই আরো অল্পবয়েসী। হয়ত মা ফুটপাতেই জীবিকার সন্ধান মেলে!
ইস! কী কঠিন দৃশ্য!

নিজের বাচ্চা আছে বলে এগুলো খুব বেশী লাগে! একেবারে বুকের ভেতর মুচড়ে ওঠে! এদের জন্য কিছু করা দরকার। বড় হয়ে গেলে, বুঝতে শিখলে একটা কিছু হোক, কিন্তু এই শিশুদের কেন এমন হবে!?

আমার মেয়েটার মত ওদেরকেও বড় ভালোবাসতে ইচ্ছা করে, একটু মমতার ছোঁয়া দিতে ইচ্ছে করে। এটুকু ওদের পাওনা!

২৩.০৮.২০১৭

Tuesday, August 22, 2017

নীল আকাশের নীচে...

নায়ক রাজ রাজ্জাক এই নীল আকাশের নীচে আর নেই। কোন এক অনন্ত আসীমের দিকে চলে গেছেন। সেখানকাকার আকাশ হয়ত আরো নীল!

প্রথম খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয় স্কয়ার হাসপাতালে যখন তিনি ভর্তি হন সার্জারী ইউনিটে সানাওয়ার স্যারের অধীনে। বেশ কয়েক বছর ধরেই প্রায়ই অসুস্থ থাকতেন, বেশ কয়েকবার আইসিইউ ঘুরেছেন। প্রচুর সিগারেট খেতেন, ফুসফুস তা মেনে নেয়নি। অল্পতেই নিউমোনিয়া হয়ে যেত তবুও সিগারেট খাওয়া কমান নি।

তো সেদিন রাউন্ডে স্যার আসলে প্রথমেই আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেন: "কি ব্যাপার। নায়কের কি অবস্থা? চলতো দেখে আসি"
আমি প্রথমে ধরতেই পারিনাই স্যার কি বলছেন। যারা সানাওয়ার স্যারকে চেনেন তারা জানেন তিনি কি রকম রাশভারি মানুষ, তাঁর সব আবেগই নিয়ন্ত্রিত! তিনি যখন উচ্ছাস প্রকাশ করেন সেইটা আলাদাভাবেই ধরা যায়। স্যার প্রথমেই নায়কের রুমে গেলেন।
- কি নায়করাজ! কি খবর?
অনেক্ষণ কথা শুনলেন, প্রায় সবই "আধ্যাত্মিক টাইপ" কথা, নায়ক রাজও তাঁর কথার ঝাঁপি খুলে বসলেন। তাঁর শ্বাসের সমস্যা নাকি অনেক আগে থেকেই। সে সময়েই নাকি শুটিঙয়ের ফাঁকে  তোয়ালে দিয়ে মাথা ঢেকে "বেনজিন ইনহেলেশন" নিতে হত!

"সাল্বুটামলে কাজ করেনা আমার ঐ বেনজীনই ভালো ছিল।"
বোঝা যাচ্ছিল অনেক ঘুরে তাঁর সব ওষুধ যেমন মুখস্ত তেমন ওষুধে আস্থাও কম! ঐ অবস্থায়ও তাঁকে কেবিনে সিগারেট খাওয়া থামানো যায়নি। নাকয়েরা এমনই হয়। তারাই স্টাইল তৈরী করে, তাঁদের  জন্য সব আলাদা!

নায়কেরা সার্বজনীন। রাজ্জার নায়ক রাজ। নায়কদের রাজা। সানাওয়ার স্যার যতই আমাদের নায়ক হোক, স্যারেরও নায়ক তিনি!  স্যার তাঁকে কেবিন থেকে বেরিয়ে বললেনঃ
- নায়ক রাজ তাইনা? চলো অন্য রোগী দেখি!

আসলেই তিনি নায়কদের রাজা, নায়কদের নায়ক!

Thursday, August 10, 2017

সাম্মীকে রোদে দেই

দুপুরবেলা..
জানালা দিয়ে রোদ এসে পড়েছে বিছানায়। সেই রোদে বিছানার একটা বালিশ দেয়া আছে, ঘামে ভেজা বালিশগুলো তাতে একটু তরতাজা হয়।

আমার মেয়ে তার উপর গিয়ে বসে পড়েছে, বেশ কড়া রোদ তার গায়েও লাগছে। এ দেখে তারা মা যখন তাকে বললো:
- মা! কি করো!? রোদে কেন বসেছ? এদিকে আসো মা!
সে উদাস নয়নে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে, দু হাত কোলে ভাজ করা। উত্তর নাই।
আবার মায়ের প্রশ্ন:
-সাম্মী! কি করো!?
এবার সাম্মীর উত্তর:
-সাম্মীকে রোদে দিই!

(কিছু বলার আছে!? নাই। 😰)

০৬.০৮.২০১৭

রোজনামচা ০১.০৮.২০১৭

কত কি যে লিখতে ইচ্ছে করে!

এই যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আজ ঘোষণা দিয়ে দিলেন সিদ্দিকুরকে "স্বাস্থ্য অধিদপ্তর" চাকুরি দেবে, তার চোখ ভালো না হলেও"; এমনিতেই পুলিশের করা ঘা'য়ে মলম লাগানোর দায়িত্ব নিজের কাধে তুলে নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, না মন্ত্রণালয় নয় কিন্তু! সিদ্দিকুরকে বাইরে নেবার ৬ লাখ টাকা যেমন যোগাড় করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তেমনি তাকে চাকরিও দেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর! ওদিকে পুলিশ মুখে কুলুপ এটে বসে আছে! মাঝে বলেছিল "ইটের টুকরা"! এখন এখন যেহেতু নাসিম সাহেব সব বলে দিচ্ছেন তাই তারা চুপ চাপই আছে, এমনকি ঠিক কোন পুলিশ সদস্য টিয়ার শেল ছূড়েছিল তাও কিন্তু পুলিশ কখনও বলেনি। অথচ সব টিভি চ্যানেলের ফুটেজে আছে কে কিভাবে শেল ছুড়লো!!!

আবার এদিকে শিশু তোহফা তহুরাকে দেশে প্রথমবারের হাইপোপেগাস অপারেশন হয়ে গেল সবার অজান্তেই। অথচ দেশের চিকিৎসা ইতিহাসে এটি নি:সন্দেহে একটা মাইলফলক! সরকারি সুযোগ-সুবিধাতেই কিন্তু হয়েছে এই অপারেশন! দেশের সব বড় অর্জনই কিন্তু এসেছে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায়, কিন্তু "ব্যবসার" অংশটার কারণে বেসরকারি খাত এখনও মানুষের "আস্থা"র জায়গাটায় আছে। কারণ বিজ্ঞাপন আর চাকচিক্যময় পরিবেশ মানুষকে সরকারি সেবার প্রতি আস্থাহীন করেছে, নিজেদের পকেটের টাকায় "বড়" করছে তাদের!

আবার ইউএনও সালমন সাহেবকে "সিনিয়র সহকারী সচিব" এর মর্যাদা দিয়ে সচিবালয়ে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রশাসন কিন্তু তাদের পরিবারের সদস্যকে সর্বোচ্চ সমর্থন দিয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের সদস্যকেও কিন্তু মাথা নত করতে হয়েছে প্রশাসন সেটা বাধ্য করেছে।

এই হলো আমাদের অবস্থা! আমরা অন্যান্য ক্যাডার থেকে বহুগুণ পেছনে পড়ে আছি। আমাদের অনেক শিখতে হবে, নতুনদের যেমন তেমন আমাদের সিনিয়রদেরও, যারা আমাদের নীতিনির্ধারক, পথপ্রদর্শক। আসলে আমার নিজের কাছে মনে হয় তাদেরকেই বেশী "আপগ্রেড" হতে হবে, জনপ্রসাশন কিন্তু নিজেদেরকে বয়সের সাথে সাথে উন্নত করে আর আমরা যেন "ম্যানেজার" হিসেবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে আরো "সংকীর্ণমণা", কোন কোন ক্ষেত্রে "অথর্ব" হয়ে যাই!