Wednesday, January 30, 2019

একটি "ভাল্লাগে - ঠেলায় - ঘোরতে" দেশ

কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুক জুড়ে খুব বেশী দেখতে পাচ্ছিলাম এই বাক্যটি। এমনকি কি প্রথম শ্রেণীর কিছু দৈনিক পত্রিকাতেও এই বিষয় নিয়ে খুব হাসি তামাশা করা হয়েছে। প্রথমে হালকা হাসি তামাশা থাকলেও পরে এটি একটি সামাজিক যোগাযগ মাধ্যমে "ট্রেন্ড" হয়ে যায় এবং সাধারণ ও অসাধারণ সকল মানুষই এটি লিখতে বলতে থাকেন...  "ভাল্লাগে - ঠেলায় - ঘোরতে"!

আমি দেখেছি আমার ফেসবুক পাতায় অসংখ্য প্রগতিশীল, মুক্ত ও সুন্দর চিন্তার মানুষও এই লাইন প্রচার করেছেন। আমি নিজে নানাবিধ প্রয়োজনে সামাজিক এই মাধ্যমের বাইরে যেতে পারিনি বা হয়ত তেমন দৃঢ়তা ও আমার নেই কিন্তু আমি এই "সামাজিকতা" ঠিক নিতে পারিনি! হয়তো আমি নিজেই প্রাচীন কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে এই লাইনগুলি ভাবে লেখা কখনই উচিত নয়। এটি বারবার লেখাও একধরণের প্রচার!

এর পেছনের অনেক গল্প থাকতে পারে, অনেকের স্বার্থ হাসিল হতে পারে, অনেকের নিছক আনন্দ থাকতে পারে কিন্তু সারা দেশের মানুষ যেভাবে ব্যাপারটি করেছে তাতে একটা জিনিস প্রমাণিত...
কি?
একটু বিশদভাবে বলি...

আপনি যদি বাংলাদেশের ইতিহাস দেখেন দেখবেন এই দেশে সেই প্রাচীন আমল থেকেই আরকান এসেছে, ব্রিটিশ এসেছে, মগ এসেছে,  এসেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ এই মাটিতে এসেছে... ব্যবসা করেছে এবং  বংশ বৃদ্ধি করেছে। ১৬ শতকে যখন ভাস্কো-দা-গামা আমেরিকাকে আবিষ্কার করেন মাত্র, তখন এই বাংলার সাথে শ্রীলংকার বা সিংহলের মশলার বানিজ্য চলে! সেই অবস্থা থেকে আজ আমেরিকা "আমেরিকা" হয়েছে আর আমরা বাঙালি রয়ে গেছি। এখন যদি আপনি জিজ্ঞেস করেন "আচ্ছা এই ভূমিতে বিভিন্ন দেশ থেকে এত মানুষ কেন আসলো?"

তার একটা জুতসই জবাব হতে পারে ...
এই মনে করেন ""ভাল্লাগে - ঠেলায় - ঘোরতে"!

তো "ভাল্লাগে - ঠেলায় - ঘোরতে" এসে যে সংকর জাতি তৈরি হয়ে গেল তাদের কাছ থেকে আর কি অাসা করা যেতে পারে! যে জাতি প্রায় ২০০ বছর ইংরেজ এর গোলামী করেছে এবং মীরজাফরের "বীরত্বে" পলাশীর যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করেছে, পরবর্তীতে ছোট্ট বাংলাদেশ হয়ে আবারও নিজের দেশের জাতির পিতাকে নিজেরা হত্যা করেছে তাদের মন ও মানসিকতা আর কতই বা উচু হবে! শুধু কেমন করে যেন এক অবিসংবাদিত জাদুকরের জাদুতে বাঙালি একটি দেশ পেয়ে গেছিল ৭১ এ!

যারা অনেক অসীম সম্ভাবনার কথা বলেন, অসীম ক্ষমতার কথা বলেন, অসীম প্রাণশক্তির কথা বলেন তারা হয়তো নারাজ হবেন কিন্তু আমার কেন যেন বাঙালি হিসেবে নিজের দীনতায় চোখ পড়ে! (হয়তো আমি নিজে বাঙালি আমার অক্ষমতা আছে আমারও সীমাবদ্ধতা আছে!)

ঠিক যেভাবে এই বাক্যটি এই অসম্ভব "হালকা" বাক্যটি বাংলাদেশী মানুষের কাছে ট্রেন্ড হয়েছে ঠিক সেইভাবেই বাংলাদেশের মানুষ মেকি, হালকা এবং অন্তঃসারশূন্যতার দিকে ঝুঁকছে!

খুব সোজা ভাবে দেখলে বা বললে আমাদের দেশে এখন ভালো গান হচ্ছে না, ভালো চলচ্চিত্র হচ্ছে না, ভালো ছবি আঁকা হচ্ছে না! আমাদের অস্তিত্বের সংকট নেই তাই সংস্কৃতি আমাদের কোন দিক নির্দেশনা দিচ্ছে না! আমাদের সব ভালো কিছু আগলে রাখা যাচ্ছে না, আমরা মেকি, ধার করা, অন্তঃসারশূন্য, ভাড়ামি আর অর্থহীনতার দিকে এগুচ্ছি! আমরা লাগামছাড়া ঘোড়ার মত শুধু ছুটে যাচ্ছি! আমাদের বিত্ত এসেছে, পরনে কাপড় - মুখে ভাত এসেছে কিন্তু মননে রুচি আসে নি! আমরা আজও জানি না আমরা ঠিক রুচিশীল, উন্নত, সভ্য একটি জাতি আদৌ হতে পারব কিনা!

Tuesday, January 29, 2019

Juvenile secratory breast cancer

Today's journal presentation was an exceptional one! The vase was "juvenile secretary carcinoma breast"; which is really exceptional disease and rare one (only 1% of all breast carcinoma! If I not missed). A girl of 8 years was suffering from left sided breast lump and she underwent lumpectomy and simple mastectomy later on. Actually she underwent about five surgery form  2006 to 2016 with chemo and radiotherapy (?!). Multiple histopathology shows "juvenile secretary breast cancer" and recurrence rate was so high. Then somehow Bangladesh oncological society present this case on a seminar at USA and a USA based pharmaceutical company or physicians shows interest on treating this patient with a newer molecule. Actually they have been researching on this molecule and offered to treat this patient as a trial! As the patient was not that solvent and she dropped her last regular scheduled operation due to  financial issue. So as a last hope and good offer hey agreed and physician and oncologist from Bangladesh was so happy to be a part of this huge trial! Then they the company bear all the cost and carry the patient to Sloan kettering oncological hospital in USA and there she was treated with new molecule the name was then loxo 101 which is recently been approved by FDA!

She was the number 20 among all the cases collected from all over the world. when she reached Sloan kettering hospital in USA her lump was reappeared with bony and lung metastasis. Her tissue typing and receptor status was diagnosed and determined previously by the authority before she reaching there from previous tissue block. After reaching there without delay they started medication Loxo101. Taking this oral medication twice daily for only 60 days the lump regressed and metastasis to bone and lung was totally disappeared!

Regressed of lump and the visible changes was seen from the day of only 3! Oral treatment causes decrease the long size and the image was excellent. After 2 months there is no lump and no active nodule. After 2 month treatment the patient was sent back to Bangladesh.

But when after 6 month some nodule again reappear, Bangladeshi doctor and patient was little bit disappointed. After consulting with the USA physician and trial company they again manage to fly the patient to USA and they try another newer molecule (which is not approved and marketed yet!)) Loxo 195. Result is again amazing and was exceptional one!

She is now declared hundred percent disease free and the progression of this case is excellent. She is now on regular follow up.

29.01.2019

Tuesday, January 22, 2019

পরাবাস্তব জগৎ

আজ নিয়ে প্রায় টানা ৫ টা নাইট ডিউটি করলাম। জেনারেল সার্জারি আর প্লাস্টিক সার্জারীর নন এডমিশন - এডমিশান সব মিলিয়ে এই অবস্থা! নিজের রোস্টার ছিল সাথে অনুরোধে ঢেঁকি গিলতে গিয়ে এবং পুরনো ডিউটি নিজ থেকে ফেরত দিতে গিয়ে সংখ্যা বেড়ে গেল!

গতকাল রাতে এডমিশান ডিউটি করে বাসায় ঘুম ভালো হয়নি, একটু কাজ গোছানোর চেষ্টা করেছি। গত কয়েকদিনের নাইট ডিউটি করার কারণে একটা স্লীপ দেট (Sleep Debt) ছিল। তাই আজকে শরীরটা ছিল ক্লান্ত।

পর পর মঙ্গল আর রবিবার দুটো অ্যাডমিশন হওয়ায় এবং শীতকাল হওয়ায় অসংখ্য রোগী ভর্তি হয়ে একেবারে কানায় কানায় ভরে আছে প্রতিটি ওয়ার্ড, ওয়ার্ডের বারান্দা! পুরুষ ওয়ার্ডের মেঝে খালি ছিল কিছুটা এছাড়া মহিলা, শিশু ওয়ার্ড আর এগুলোর HDU আমাদের ব্লু ইউনিটের রোগী দিয়েই ভরে গেছে! আইসিইউ তেই আমাদের রোগী মোট সংখ্যার ৮০ ভাগ!

পুরুষ, মহিলা, শিশু সব ওয়ার্ডেই  ধারণক্ষমতা  চাইতে  অনেক বেশি রোগী ছিল। একজন ভিআইপি রোগী আছেন আইসিইউতে, সংরক্ষিত নারী আসনের পদপ্রার্থীর মা! তাকে বিকালে দেখে গিয়েছেন নসরুল হামিদ বিপু! এই অতিরিক্ত ঝামেলার কারণে সাধরণ রোগিগুলোকেও সেভাবে দেখা যাচ্ছিল না।

বারবার আইসিইউতে যেতে হয়েছে, শুধু পুরুষ ওয়ার্ড ছাড়া সবগুলো জায়গায় রোগীতে ভরপুর! আক্ষরিক অর্থেই কোন রোগীর পাশে যেতে হলে যুদ্ধ করতে হচ্ছিল, যায়গা যাওয়া যাচ্ছিল না! এমনিতেই কয়েকদিনের টানা ডিউটি করে স্লিপ ডেট রয়ে গেছিল তাই সেভাবে মনযোগ ধরে রাখা যাচ্ছিল না। রাতের একসময় মনে হচ্ছিল  একটা পরাবাস্তব দুনিয়ার আছি। আমি আমাকে চালাচ্ছি না! আইসিইউ থেকে এক রোগীর স্বজন এসে আবদার করল তার রোগীকে দেখতে যেতে হবে তখন আমি ঠিক মাথা সোজা করে রাখতে পারছিনা, মনে হচ্ছিল কেউ আমার মাথা ধরে রাখলে খুব ভাল হত! কিন্তু আমি সেই রোগীকে দেখে এসেছি এবং আমি জানি ওনার জন্য খুব বেশী কিছু করার নাই আমার তবে আমার একবার দেখতে যাওয়া উচিত নইলে রোগীর স্বজনের কাছে চিকিৎসা গ্রহনযোগ্য মনে হবে না। কিন্তু এভাবে যদি সবার রোগী দেখতে যেতে হয় তবে ডাক্তার লাগবে কয়েকজন! তাও কিছুক্ষণ বসে একটু স্থির হয়ে দেখে এলাম। এরপর একটু শোয়ার পরেই আসল এক মওলানা যার বাচ্চাকে আমি দেখে এসেছি এবং ভালোভাবেই সব বলে এসেছি। কিন্তু ভালোভাবে বলআর একটা ঝামেলা হল, লোকজন তখন যা তা সব আবদার করে বসে এবং সেগুলো মেটানো কোন চিকিৎসকের পক্ষে সম্ভব না! তখন মনে হল বাঙালি হিসেবে আমরা কিছুটা "ঝাড়ি প্রিয়"! যে আমাকে শাসন করতে পারে, শাসনের সুরে কথা বলে আমরা তাকে বেশী মূল্যায়ণ করি এবং তার কথা মনযোগ দিয়ে শুনি। চিকিৎসা করার সময় এই জাহড়ি বেশ কাজে দেয়!

এসব করতে করতে একসময় ভোরের দিকে একটা বাচ্চা মারা গেল আসমা, ১২ বছরের প্রতিবন্ধী। এরপর শুরু হল তার মায়ের আহাজারি! একটানা বিলাপ করতে থাকা!

হঠাত একটা ঘোরলাগা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি বলে মনে হতে লাগলো। মনে হচ্ছিল হয়ত এই জীবন আমার নয়, এই মুহুর্ত আমার না, আমি যা করছি তা ঠিক আমি করছি না, কেউ আমাকে দিয়ে এগুলো করিয়ে নিচ্ছে! একটা পরাবাস্তব জগতে ঢুকে গেছি বলে মনে হচ্ছিল!

১৮.০১.২০১৯