Monday, July 29, 2019

মেয়ের কি বুদ্ধি!!!

আজ একটু আগে আমার মেয়ের বুদ্ধি দেখে আমি যারপরনাই বিস্মিত! আমার চোখে পানি চলে আসছে!

প্রতিদিনের মত আজকে রাতেও সে "একটা গল্প বল"!

আমি গতকাল তাকে কোন একটা গল্প বলতে বলতে ঘুমিয়ে গেছিলাম। ভাবলাম আজ সেটা বলি, শেষ করি। কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারলাম না ঠিক কোন গল্পটা বলেছিলাম। বারবার মনে হচ্ছিল পিরামিডের গল্প! কিন্তু এইরকম কোন গল্প আমার নিজেরই মাথায় আসছে না!

মেয়েকে জিজ্ঞেস করলাম: মা! কাল তাহলে তোমাকে কি গল্প বলেছিলাম আমাকে মনে করিয়ে দাও!

(সে এগুলো পারে! তার স্মরণশক্তি প্রখর! গতকাল তার মা'র odomos আনার কথা ছিল। পায়নি, বলে আমাকে বলছিল: সাম্মির জন্য আনতে চেয়েছিলম কিন্তু  পেলাম না!

সাম্মি তো আর জানেনা odomos কি বস্তু! ভেবেছে নিশ্চই তার জন্য দারুন কিছু! সে সেটা মনে রেখেছে! গতাকাল বলেনি! আজ মা আসতেই মাকে বলছে:  "কাল যেন সাম্মির জন্য কি আনতে চাইলে আনতে পারলে না? সেটা কি আজ এনেছ?)!!!

তো সাম্মি বললো:
- তুমি আমাকে কাঠুরের গল্প বলছিলে।

হবে হয়তো! আমি কাঠুরের গল্প এতবার বলছি! প্রতিবারই নতুন কিছু মশলা যোগ হচ্ছে! কিন্তু সে আজকে বলল সে কাঠুরের গল্প শুনবে না। সে অন্য কোন গল্প শুনতে চায়।

আমার মাথায় আসলো, একটা কাকের গল্প! যে পানি খেতে গিয়ে না পেরে বুদ্ধি করে পাত্রের ভেতর ছোট ছোট পাথর ফেলে পানি খেয়েছিল।

তো আমি সেই গল্পই বলছিলাম। একটি খুব সুন্দর কাল কাক ছিল! বুঝাচ্ছিলাম একটা জগের মতো পাত্র ছিল। সেখানে পানি খেতে পারছিলনা কাকটা। পাত্রে পানি কিন্তু ছিল কিন্তু পানি পর্যন্ত কাকের ঠোট যাচ্ছিল না। আবার জগটা ফেলে দিয়ে পানি খাওয়াও যাচ্ছিল না। যগটা শক্তভাবে মাটিতে ছিল। কাকটা কিছুতেই পানি খেতে পারছিল না। কিন্তু ওর খুব পানি পিপাসা পেয়েছিল।

শেষে বললাম:
- বলতো মা! কাকটা এখন কিভাবে পানি খাবে!? তুমি কাকটাকে একটা বুদ্ধি দাওতো!

সে আমাকে বলল:
- তাহলে আর তিনটা কাককে ডেকে নিয়ে আসবে। আর তিনজনে মিলে ঐ পাত্রটা ধাক্কা দিয়ে ফেলে পানি খাবে!

চমৎকার বুদ্ধি!! এইগুলোই সারাদিন করে তো সে! এইতাই তার সহজাত বুদ্ধি হবার কথা!

আমি বললাম:
- নাহ! আর কোন পাখি নাই। ও ওর কোন বন্ধু কাককেও দেখতে পাচ্ছিল না, আর কোন অন্য পাখিকেও না।

তখন স্বামী বললো:
- তাহলে দুটো পাখি আসবে!

আমি বললাম:
- না, আর কোন পাখি আসতে পারবে না। ঐ কাকটাকে একাই একটা কিছু করতে হবে!

তো যখন সাম্মি আর কোন বুদ্ধি দিতে পারছে না তখন আমি বললাম:
- তাহলে আমি বলি! ও বুদ্ধি করলো- বড় একটা পাথর ফেলবে ঐ পাত্রে। তারপর নিচু হয়ে যাবে তখন পানি ওপরে চলে আসবে। আর ও সেটা খাবে!
তুমি দেখেছো না, তোমার মগে পানি একদম বেশী নিলে, মগের ভেতর একটা চামচ বা কিছু পড়লে তখন পানি মগ থেকে পড়ে যায়!

কি বুঝল কে জানে। বলল:
- হু!
- কিন্তু বড় পাথর তো ও আনতে পারছে না। ও তো একটা পাখি। ওত বড় একটা পাথর ও কেমন করে আনবে!? তাহলে এখন কি করবে? এত কষ্ট করে ও পানি খাবেনা? কিন্তু ও ভাবল ওকে কিছু একটা করতেই হবে। আরো ভাবতে হবে। এরপর ও চোখ বন্ধ করে ভাবতে লাগলো। কি করা যায়.. পানি খেতেই হবে... এখন তুমি ওকে একটা বুদ্ধি দাও তো মা ও কি করবে।

মেয়ে তখন সাথে সাথে বুদ্ধি দিয়ে দিয়েছে!
তা হল:
- তাহলে ও ছোট ছোট, নরম(!) পাথর নিয়ে আসবে। নরম পাথর পানিতে ফেলবে আর তখন পানি ছুক করে ছিটে আসবে আর তখন সেটা খাবে!

(কী বুদ্ধি! কী বুদ্ধি!!)

- তারপর দুটো তিনটে পাথর দেবে আর সব পানি খেয়ে ফেলবে!

কী দারুণ বুদ্ধি!!!

এমন বুদ্ধি তো আমার মাথতেও আসত না!

সুবহানাল্লাহ!

২৯/০৭/২০১৯
রাত ১.৩০

Tuesday, July 2, 2019

চিনি খেলে কি ডায়াবেটিস হয়!?

সোজা কথায় উত্তর হচ্ছে "হা"!

আর একটু বিস্তারিত বললে বলতে হবে, ডায়াবেটিস কাদের হবে সেটি অনেক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। যে কারণে অনেকেই চিনি বা মিষ্টি কম খান কিন্তু ডায়াবেটিস এড়াতে পারেন না। কারণ পরিবারে কারো ডায়াবেটিস থাকলে তাদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস হবার সম্ভবনা বাড়ে। প্রত্যেকের শরীরের গঠন অনুযায়ী কিছু কিছু বিষয়ও সাথে দায়ী।

এগুলো আমরা এড়াতে পারিনা কিন্তু যেটা পারি টা হচ্ছে আমাদের জীবনযাত্রার পরিবর্তন, যা আধুনিক জীবনযাত্রায় ডায়াবেটিসের জন্য অনেকাংশে দায়ী।

শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, অপরিমিত খাবার, রিফাইন সুগার এগুলো শরীরের অগ্নাশয়ের ওপর চাপ ফেলে। ফলে বেশী চিনি খেলে অগ্ন্যাশয় বা প্যানক্রিয়াস কে বেশী বেশী ইনসুলিন রক্তে দিতে হয়, ফলে একসময় অগ্ন্যাশয় তার কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে। তাই বেশি চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে পক্ষান্তরে ডায়াবেটিস হবার সম্ভবনা বাড়ে।

ঠিক এই কারণেই বাজারে প্রচলিত গ্লুকোজ ড্রিং বা অতিরিক্ত মিষ্টি পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত।

০২/০৭/২০১৯

প্রবাদ পুরুষ: ডাক্তার বিধান চন্দ্র রায়

ডাক্তার বিধান চন্দ্র রায় চিকিৎসা সমাজের জগতের জন্য একজন উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। তিনি তার সময়ে এতটাই প্রভাব বিস্তার করেছিলেন যে তার জন্মদিন পহেলা জুলাই কে সারা ভারতবর্ষে চিকিৎসক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এবং তার সেই প্রভাব বিদ্যমান আজও!

কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯০৬ সালে এল এম এস পাস করেন এবং এরপরে মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে মাত্র ২৬ বছর বয়সে এম ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। মাত্র 26 বছর বয়সে এমডি ডিগ্রি অর্জন প্রমাণ করে তিনি কতটা মেধাবী ছিলেন! শুধু তখনকার সময়ের নয় এখনকার সময়ে ২৬ বছর বয়স এবং এই ডিগ্রী চিকিৎসকদের জন্য ঈর্ষণীয়।

কথিত আছে যে তখনকার কলকাতার আরেক বিখ্যাত চিকিৎসক ডাক্তার নীলরতন সরকারের মেয়েকে পছন্দ হয়ে যায় বিধানচন্দ্র রায়ের। কিন্তু নীলরতন সরকার তার কাছে মেয়েকে বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান এই বলে যে, তার মেয়ের একদিনের হাত খরচের সমান উপার্জন একমাসেও করতে পারেন না বিধান চন্দ্র রায়! এতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন এবং সিদ্ধান্ত নেন আরো ডিগ্রী অর্জনের! এবং মাত্র দু'বছরের মধ্যে লন্ডন থেকে এমআরসিপি এবং এফআরসিএস ডিগ্রি অর্জন করেন! এবং এও কথিত আছে যে লন্ডনের রয়েল কলেজ তাকে বারবার ফিরিয়ে দেওয়ার সত্বেও ৩০ তম অবেদনের পর তাকে ফেলোশিপ প্রদান করে। তবে যাই হোক, তিনি ফিরে এসে কলকাতা শহরে চিকিৎসা পেশা শুরু করেন।

আজ থেকে ১০০ বছরেরও বেশি সময় আগে কোন একজন তরুণ চিকিৎসক মাত্র ২৯ বছর বয়সে এতগুলো ডিগ্রী নিয়ে তার চিকিৎসা শুরু করেছেন সেটি অবশ্যই সারাদেশে একটি চমকপ্রদ ঘটনা হবার কথা! সম্ভবত সেটি হয়েছিল! সাধারণ মানুষ এমনিতেই চিকিৎসকের ডিগ্রি দেখেই তাকে বিচার করেন তিনি কত বড় চিকিৎসক সুতরাং তখনকার দিনে বিলেত ফেরত বিধানচন্দ্র রায় যে সারা ভারত বা পশ্চিমবঙ্গের সাড়া ফেলেছিলেন সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। তখনকার দিনে "উত্তম কুমার ডাক্তার হয়েছেন এবং বিলেত থেকে ডিগ্রি নিয়ে এসেছেন" ছবির এই দৃশ্যগুলো সম্ভবত বিধানচন্দ্র রায়ের এই ঘটনার পরবর্তী প্রভাবেই আসে।

আরো প্রচলিত আছে যে, ডা: বিধান চন্দ্র রায় রোগীর মুখ দেখেই রোগীর রোগ বুঝতে পারতেন। একজন চিকিৎসক হিসেবে এটা বলতেই পারি এমন অনেক রোগ আছে যেটি মুখ দেখেই বলে দেয়া সম্ভব, চোখ দেখেই বলে দেয়া সম্ভব, কণ্ঠস্বর শুনে ধারণা করা সম্ভব, এমনকি শুধুমাত্র হ্যান্ডশেক করে বলে দেওয়া সম্ভব! বিধানচন্দ্র রায়ের মতন একজন মেধাবী ও এত জ্ঞানী মানুষের পক্ষে সেটি সম্ভব হবে এটি স্বাভাবিক এবং সাধারন মানুষ তার এই ব্যাপারটিতেই অলৌকিক বা অতি অসাধারণ মনে করেছেন এবং তাকে প্রায় ঈশ্বরের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন।

পরবর্তীতে তিনি এতটাই জনপ্রিয়তা পান যে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন এবং অামৃত্যু এই রাজনৈতিক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।

০২/০৭/২০১৯