Saturday, March 19, 2022

আমাদের মিল্কি ওয়ে

বছর পাঁচেক আগের ছবি।

যখন আমি আমার উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে কাজ করি।
যখন ইলেকট্রিসিটি চলে যায় আমি হুড়মুড় করে ছাদে ওঠার চেষ্টা করি, আশেপাশে যতক্ষণ আলো না জ্বলে আঁধার থাকে সেই সময়টা কাজে লাগানোর চেষ্টা; "লাইট পলিউশান" এড়ানোর চেষ্টা আর কি!

সবসময় আকাশ পরিষ্কার পাই না, বেশিরভাগ সময় মেঘ থাকে বা চাঁদের আলো থাকে! কোয়ার্টারের ছাদে ওঠাও একটা হ্যাপা, সেখানে রাজ্যের আগাছা; ঠিকঠাক ইনফিনিটি ফোকাস করতে করতেই মাঝে মাঝে সামনের কোয়ার্টারে তীব্র আলো জ্বলে ওঠে, লং এক্সপোজারে ছবি নষ্ট হয়; আমি ট্রাইপড গুটিয়ে চলে আসি! সব সুবিধামত পেয়ে গেলেও কয়েক মিনিটের ছবিতে নয়েজ কমে না; শুধুমাত্র ম্যানুয়াল শাটার চাপব না বলে ইতোং বিতোং করে ফোনকে শাটার বাটন বানাই; তাও মনের মত ছবি পাইনা; আমার চাওয়া অনেক কিন্তু ক্যামেরা হচ্ছে ক্যানন ১২০০ (যারা ছবি তোলেন তারা জানেন এইটা একদম এন্ট্রি কোয়ালিটি ক্যামেরা)!

তাও আমি দমে যাই না, 'মিল্কি ওয়ে" - আমাদের ছায়াপথের ছবি তুলব! লক্ষ কোটি নক্ষত্রের আমাদের ছায়াপথ! যে আলো ছবিতে ধরেছি তার অনেক নক্ষত্র আদতে এখন নাই; কোন কোনটা আরও হাজার বছর আগেই আলো দিয়ে মরে গেছে! সেই শেষ আলোটা ক্যামেরায় ধরব! কী উত্তেজনা! ছাদের ঘুট ঘুট শুনে প্রথমদিকে Monimul Habib ভাই চলে আসতেন, পরে উনিও অভ্যস্ত হয়ে গেলেন; ছাদের একটা চাবি আমার কাছে থাকত।

এইসব ছেলেমানুষী করতে গিয়ে যা কিছু ছবি তুলেছিলাম সেগুলো এখন আমাকে অসম্ভব আনন্দ দেয়!

যেদিন মস্ত চাঁদ ওঠে, গরমে হালকা বাতাসে আমার ছোট্ট মেয়েকে ঘাড়ে নিয়ে চাঁদ দেখাই, চাঁদের গান শোনাই, কি সব আবোল তাবোল ওকে শোনাচ্ছি শুনে লোকে হাসে, ভাবে স্যারের মাথায় হালকা সিট আছে!

কী পরাবাস্তব সময়!

সেই এক সময়ের সাক্ষী আমার কোয়ার্টারের মাথার ওপর আমাদের ছায়াপথ!

#milkyway
#canon1200d