স্কুলে আমাদের বাংলা টিচার ছিলেন গীতা ম্যাডাম ;
গীতা মজুমদার! আমার ক্লাস সেভেনে প্রিয়
মাত্র দুইজন শিক্ষকের মাঝে তিনিও একজন
ছিলেন! বাংলার শিক্ষকেরা যেমন হয় তিনিও
ঠিক তেমন ছিলেন; একেবারে মাটির
মানুষ! ক্লাসে পড়া ধরতেন কিন্তু না পারলে চিপ ধরে টান! ছোট একটা বেতও ছিল
তার, মিনি কিন্তু মোটাসোটা। বসে বসে সাবধান- আরাম! এগুলোও হত ক্লাসে! তিনি পড়াতেনও খুব ভালো!
বাংলার আর কি পড়াবার থাকতে পারে সেরকম ক্লাস নিতেন না(যদিও বাংলার আমার
সেরা শিক্ষক নটরডেমের প্রবাদতুল্য মুখতার স্যার; সেকথা পরে) তবুও ওই
ক্লাস সেভেনের জন্য ম্যাডাম ছিলেন আমার অনুকরণীয়!
তো একদিন ক্লাসে খুব কথা হছে; কোলাহল বেশী হচ্ছে; পেছনের দিক থেকে স্বাভাবিকভাবেই বেশী কথা হচ্ছে! আমারা যারা ম্যাডামের ক্লাসের
ভক্ত শ্রোতা ও আতেলশ্রেণী তারা এবার নিজেরাই বলতে লাগলাল ওই অমুক থাম; এত কথা কিসের; সামনের দিকের সব ছেলেরা পিছনে ঘুরে গেছে!
সবাই জানে ম্যাডাম কিছুই বলবেনা ক্লাসে এইগুলা নিয়ে! কিন্তু তিনি বল্লেন : শোন একটা গল্প বলি!
গপ্লের কথায় ক্লাস এইবার একটু শান্ত!
ম্যাডামের কথাগুলো ছিল মোটামুটি এইরকম: তারা
ছোয়বেলায় একবার সিনেমা দেখতে গেছেন হলে! তখনকার দিনে মেয়েদের সিনেমা দেখা মানে
বিশাল ব্যাপার! বাসার সবাই মিলে বিরাট আয়োজন
করে সিনেমা দেখতে যাওয়া! সিনেমার এক
পর্যায়ে সামনের দিকের দুই ভদ্রলোকের মাঝে লেগে গেল কথা কাটাকাটি! একজনের মাথার জন্য আরেকজন দেখতে পাচ্ছেনা এইসব! তারা দুইজন দাড়িয়ে গেলে তাদের জন্য পেছনের
অনেকে আবার দেখতে পাচ্ছিল না! তখন তারা বলতে লাগলো "হল্লা মাত করো"!
(মাত করো মানে যে কইরো না এইটা আমি পরে বুঝছি) পরে তাদের মত অন্যদিক থেকেও অন্যরা
বলতে লাগলো "হল্লা মাত করো" - তাদের এইবার শুনতে সমস্যা হচ্ছে!এইভাবে কিছুসময় পর সবাই বলছে
"হল্লা মাত করো"! কিন্তু আসলে মূল হল্লা না কমে নতুন হল্লা বেড়েই
যাচ্ছে!
তো সেই "হল্লা মাত কর" তখন থেকেই
মাথায় ঢুকে আছে! মানুষের মস্তিষ্ক অনেক অপ্রয়োজনীয় ব্যাপার রেখে দেয় এইটা হয়ত
তেমনই কোন ঘটনা! কিন্তু মাথার ভিতর বসে
যাবার কারণে আমি এই হল্লা মাত কর সিচুয়েশনে কথা বলিনা! বলতে পারিনা কিন্তু লোকের
এই আজেবাজে কথার "হল্লা" শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছি! চিতকার করে ;
কন্ঠনালী চিরে বলতে ইচ্ছা করছে: "হল্লা
মাত করো"(উর্দূ বলা যাবেনা তাই বলতে হবে "থাম সবাই" অথবা "অফ
যা"!)
১০.০৪.২০১৪